Sylhet Today 24 PRINT

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনা: ২৪ ঘণ্টায় ৭ জেলায় শনাক্ত ১৩ জন

যশোর প্রতিনিধি |  ২২ এপ্রিল, ২০২০

দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে পঞ্চম দিনের পরীক্ষায় ৬৫টি নমুনার মধ্যে ১৩টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়। ১৩টি পজিটিভ নমুনার মধ্যে যশোর জেলার চারটি, কুষ্টিয়ায় দুটি, মেহেরপুরে একটি, মাগুরায় একটি ও নড়াইলে পাঁচটি রয়েছে। নড়াইলের পাঁচটি নমুনার মধ্যে চারটিই চিকিৎসকদের।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও যশোর সিভিল সার্জন নিশ্চিত করেন যে, যশোর জেলায় নতুন করে চারজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার তথ্য মিলেছে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের সহকারী পরিচালক প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, এখানে দক্ষিণ-পশ্চিমের সাত জেলার সন্দেহভাজন রোগীদের ৬৯টি নমুনা আসে। ৪টি বাদে ৬৫টি নমুনা পরীক্ষার ফল ১৩টি পজিটিভ ও বাকি ৫২টি নেগেটিভ।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নড়াইলের এই চার চিকিৎসক একই হাসপাতালে কর্মরত। আর যশোরের যে চার করোনা রোগী শনাক্ত হলেন, যশোর সদরের এক, চৌগাছা দুই ও শার্শা উপজেলা একজন বাসিন্দা রয়েছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শুক্রবার থেকে করোনা সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রথম চার দিনের নমুনাগুলোতে একটিও পজিটিভ রিপোর্ট আসেনি। পঞ্চম দিনে হঠাৎ করে ১৩ করোনা রোগী শনাক্ত হলেন।

এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বুধবার সকালে বলেন, ‘কোন গুচ্ছ (ক্লাস্টার) থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে। কালেকশনে যদি ত্রুটি না থাকে, তাহলে ফলাফল সঠিক হওয়ার কথা।’

তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার নতুন কিট দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদিন সরকারের পক্ষ থেকে ৪৮০টি কিট পায় যবিপ্রবি। এর আগে শুক্রবার নমুনা পরীক্ষার শুরুতে ৪০০টি কিট সরবরাহ করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টিকে।

তাহলে কি প্রথম দফায় আসা কিট ত্রুটিপূর্ণ ছিল ? এমন প্রশ্নের জবাবে ভিসি ড. আনোয়ার বলেন, ‘না, তা বলা যাবে না। ত্রুটিপূর্ণ কোন কিটে পজিটিভ বা নেগেটিভ-কোন রিপোর্টই পাওয়া যায় না।’ ‘তা সত্ত্বেও সন্দেহ দূর করার জন্য আমরা প্রথম চার দিনের নমুনাগুলোর মধ্য থেকে র‌্যান্ডমলি রিচেক করব,’ বলছিলেন ভিসি।

পঞ্চম দিনের পরীক্ষার ফলাফল চূড়ান্ত হয় মঙ্গলবার দিনগত রাত তিনটার দিকে। ফলাফল হাতে পাওয়ার পর পরই তা ই-মেইল ও অন্য মাধ্যমে আইইডিসিআর এবং স্ব-স্ব জেলার সিভিল সার্জনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

যবিপ্রবির উপাচার্য আরও জানিয়েছেন, সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরএনএ আইসোলেশন কিট সরবরাহ করেনি। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের আরএনএ আইসোলেশন কিট পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেহেতু এখানে জেনোম সেন্টার রয়েছে তাই রিএজেন্টও থাকে। দ্রুত আরএনএ আইসোলেশন কিট সরবরাহের দাবি জানিয়ে ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, না হলে এখানে করোনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন এই জেলায় নতুন করে চারজনের করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেন। তবে তারা কোন এলাকার লোক, তা তখনই নিশ্চিত করতে পারেননি সিএস।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নতুন কিট দিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদিন সরকারের পক্ষ থেকে ৪৮০টি কিট পায় যবিপ্রবি। এর আগে শুক্রবার নমুনা পরীক্ষার শুরুতে ৪০০টি কিট সরবরাহ করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টিকে। পঞ্চম দিনের পরীক্ষার ফলাফল চূড়ান্ত হয় মঙ্গলবার দিনগত রাত তিনটার দিকে। এর আগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মঙ্গলবার পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা, নড়াইল এবং বাগেরহাটে একজন করে করোনা রোগীর সন্ধান মেলে। আর খুলনার এক মৃত ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায় মঙ্গলবারই।

আজ যবিপ্রবি থেকে পাওয়া ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এই অঞ্চলের নড়াইল ও যশোরে করোনাভাইরাস বেশ ছড়িয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা এতদিন করোনামুক্ত মনে করা হলেও এখন সেখানে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি আছেন তা নিশ্চিত হলো।

 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.