Sylhet Today 24 PRINT

করোনা প্রথম ছড়িয়েছে বাংলাদেশ থেকে!

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৮ নভেম্বর, ২০২০

চীনের একদল গবেষক দাবি করেছেন, ২০১৯ সালের গ্রীষ্মেই সম্ভবত করোনার জীবাণু ছড়িয়েছে। আর সেটা ছড়িয়ে থাকতে পারে ভারত অথবা বাংলাদেশ থেকে। এখান থেকে এ জীবাণু উহানে বাহিত হয়েছে। আর উহানেই এটা প্রথম শনাক্ত হয়।

চীনের একাডেমি অব সায়েন্সের একদল গবেষকের গবেষণার ফলাফলে দাবি করা হয়েছে এ বিস্ফোরক তথ্য। গবেষণাটি চিকিৎসা বিষয়ে বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত জার্নাল ল্যানসেট এর একটি প্রি-প্রিন্ট প্ল্যাটফর্মে গত ১৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়।

পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা অবশ্য আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন এই বলে যে, এই গবেষণা ‘বড় ধরনের’ দাবি তুলছে আর এ কারণে সতর্কতা ও সন্দেহপ্রবণ চোখে এটি ভালো করে মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইল-এর অনলাইন সংস্করণে শুক্রবার এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এর আগেও চীনের একাধিক গবেষণায় কোভিড-১৯ মহামারির দায় দেশটির সীমান্তের বাইরে কারো ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে। একাধিক গবেষণায় ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রকে এই জীবাণুর উৎস দেশ হিসেবে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া এই জীবাণুর উৎস কী তা নিয়ে ডব্লিউএইচও এখনও অনুসন্ধান শেষ করেনি।

চীনের এই সর্বসাম্প্রতিক গবেষণাপত্রে গবেষকেরা করোনা জীবাণুর উৎস শনাক্তের পলিজেনেটিক অ্যানালাইসিস পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। সকল জীবকোষের মতো ভাইরাসও পুনরুৎপাদনের সময় মিউটেট করে, অর্থাৎ এটির ডিএনএতে সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তন থেকে এটির উৎস অনুসন্ধান করা যায়। যেখানে ভাইরাসটির কোষে মিউটেশনের পরিমাণ কম পাওয়া যাবে, সেখানেই এটির উৎস হতে পারে।

চীনা গবেষকেরা বলছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তারা যে ফল পেয়েছেন, তা থেকে বোঝা যায়, ভাইরাসটির ‘আদি’ রূপ উহান থেকে আসেনি। অন্য আরো আটটি দেশ থেকে তা আসতে পারে। এ আটটি দেশ হলো: বাংলাদেশ, ইউএসএ, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক রিপাবলিক, রাশিয়া ও সার্বিয়া।

গবেষকেরা আরও বলেছেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারতের নমুনায় এ ভাইরাসের ডিএনএতে কম মাত্রায় মিউটেশন পাওয়া গেছে, তাই এ দুই প্রতিবেশী দেশ থেকেই এটি ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।

ভাইরাসটি একবার মিউটেট করতে যে সময় নেয় এবং বিভিন্ন স্থানে পাওয়া এটির নমুনার তুলনা করে গবেষকরা হিসাব কষে বলছেন, ২০১৯ সালের জুলাই বা আগস্ট মাসে এটি প্রথম মানবদেহে আবির্ভূত হয়ে থাকতে পারে।

গবেষকেরা আরও বলেছেন : ‘২০১৯ সালের মে থেকে জুনের মধ্যে উত্তর-মধ্য ভারত ও পাকিস্তানে তীব্র দাবদাহ বয়ে গেছে। এর ফলে এ অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছিল।

‘পানি সংকটের কারণে বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মধ্যে খাবার পানি নিয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত শুরু হয়। এ থেকে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংস্পর্শের সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবে বেড়েছে।’

এই দাবদাহকেই প্রাণী থেকে মানব শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণ বলে মনে করছেন গবেষকেরা।

গবেষকেরা বলছেন, ভারতের দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং তরুণ জনগোষ্ঠীর কারণে কয়েক মাস জুড়ে এটি ছড়িয়ে পড়েছে।

চীনা গবেষকেরা আরও বলছেন, চীনে ছড়ানোর আগে তালিকায় থাকা আট দেশের অন্যত্রও এ ভাইরাস ছড়িয়ে গিয়ে থাকতে পারে। ফলে ইউরোপ হয়ে এটি চীনে এসে থাকতে পারে।

তবে অন্যান্য গবেষকেরা এই গবেষণার সঙ্গে একমত নন।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিশেষজ্ঞ মার্ক সাচার্ড সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, সবচেয়ে কম মিউটেশন শনাক্ত করার পদ্ধতি নির্ভুল কিছু নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেকজন গবেষক ডেইলি মেইলকে বলেছেন, এই গবেষণা এতো ‘বড় দাবি’ তুলছে, যে তিনি এটির যথার্থতা নিয়ে ‘সন্দিহান’।

করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানের একটি সামুদ্রিক মাছের বাজারে। সেখানে এক সঙ্গে অনেক রোগী পাওয়া যায়, যাদের দেহে ‘অজ্ঞাত উৎসের নিউমোনিয়া’ শনাক্ত করা হয়।

এরপর এটি এখান থেকে চীনের অন্যত্র এবং পর্যটকদের মাধ্যমে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে রোগটির আদি উৎস রহস্যাবৃত থেকে গেছে।
সূত্র : নিউজবাংলা

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.