Sylhet Today 24 PRINT

ভারতে ভ্যাকসিনের ভয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘উধাও’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২২ জানুয়ারী, ২০২১

মহামারি করোনার বিরুদ্ধে লড়তে এতদিন পর্যন্ত অপেক্ষা ছিল ভ্যাকসিনের। অপেক্ষা শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনের প্রয়োগও। তবে কোনও কোনও দেশে এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিন নিয়ে ‘আস্থার’ সংকট দেখা দিয়েছে। এশিয়ার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ভারতের সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসক-নার্সরা তো রীতিমতো ‘পালিয়ে’ বেড়াচ্ছেন ভ্যাকসিনের ভয়ে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমনই খবর। বিশেষজ্ঞদের বরাতে তারা লিখেছে, এখন প্রচারণা চালানো আর সচেনতনা বাড়ানোর বিকল্প কিছুই নেই।

সম্প্রতি ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। দেশটির কোনও কোনও এলাকায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। ব্যাঙ্গালুরুতে ভ্যাকসিন গ্রহণ নিয়ে ‘মিথ্যাচার’ করছেন অনেক স্বাস্থ্যকর্মী। ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হওয়ার পর হায়দরাবাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অনেক কর্মী ‘উধাও’ হয়ে গেছেন। তাদের আর খোঁজ মিলছে না।

বিজ্ঞাপন

ব্রাহাট ব্যাঙ্গালুরু মহানগর পালিকের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তার কাছে এমন ২০টি উদাহরণ আছে; যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেননি, কিন্তু ‘ভাব’ ধরেছেন তারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন।

সূত্র জানিয়েছে, একটি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক তার সহকর্মী নার্সদের তাদের হাতে একটি তুলার বল ধরে রাখতে বলেছেন; যাতে বোঝা যায় যেন তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরুর পর গত ১৬ জানুয়ারি থেকে হয়দরাবাদের সরকারি হাসপাতাল, প্রাইমারি হেলথ সেন্টার এবং আরবান প্রাইমারি হেলথ সেন্টারের ১০ থেকে ১৫ ভাগ কর্মী আর চাকরিতে আসছেন না।

ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ যেদিন শুরু হয়েছে, সেদিনই ছুটিতে গেছেন কেউ কেউ। যেদিন ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, কেউ কেউ সেদিন আসেননি।

এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন নিয়ে দ্রুত প্রচারণা চালানোর কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। তারা মনে করছেন, এটিই এখন প্রয়োজনীয় ও জরুরি পথ।

বিজ্ঞাপন

ভারতে গত ১৬ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ সময় তিনি বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া কর্মীদের আগে টিকা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় ৩০ কোটি মানুষ টিকা পাবেন। ধীরে ধীরে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ রয়েছে। এক মাসের মধ্যেই এই দুটি ডোজ নিতে হবে। ভ্রান্তির কোনো জায়গা নেই। প্রথম ডোজ দু’সপ্তাহের মধ্যেই কাজ করবে।

অবশ্য ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরুর পর থেকেই ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে খবর আসতে শুরু করে। বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে এরই মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটিই স্বাভাবিক।  সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও ভয়ের কিছু নেই।

চলতি মাসের শুরুর দিকে পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একইসঙ্গে হায়দরাবাদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন ভ্যাকসিনেরও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.