Sylhet Today 24 PRINT

করোনাভাইরাস: ভারতে দৈনিক সংক্রমণে বিশ্ব রেকর্ড

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২২ এপ্রিল, ২০২১

ভারতের একদিনে তিন লাখ ১৪ হাজার ৮৩৫ জন মানুষের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিশ্বে এই প্রথম কোন দেশে একদিনে এতো বেশি সংখ্যক মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হলো। গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কখনও এক লাখ পেরোয়নি।

২০২১ সালের ৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দৈনিক সংক্রমণ এক লাখ অতিক্রম করে। তার ১০ দিন পর, ১৫ এপ্রিল শনাক্ত ছাড়ায় দুই লাখের গণ্ডি। এর এক সপ্তাহের মাথায় এবার এ সংখ্যা তিন লাখ ছাড়ালো।

বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে  বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে এর আগে একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের বিশ্ব রেকর্ড হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। জানুয়ারিতে দেশটি একদিনে সর্বোচ্চ দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। এবার তা ছাড়িয়ে গেল ভারত।

এতে ভারতে মোট করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশটি। একইদিন ভারতে কোভিড-১৯ জনিত মৃত্যুরও নতুন রেকর্ড হয়েছে, মারা গেছে ২ হাজার ১০৪ জন।

এতে দেশটিতে মহামারীতে মোট মৃত্যু এক লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে। মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরই ভারতে অবস্থান।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার পরিসর ক্রমেই কমে আসছে। অনেক ক্ষেত্রেই একই শয্যায় একাধিক রোগীকে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। অক্সিজেনের অভাব সামাল দিতে মাঠে নেমেছে প্রশাসনও। অনেক জায়গাতেই অস্থায়ী কোভিড কেয়ার কেন্দ্র তৈরি করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার।

সংক্রমণ শৃঙ্খল রুখতে লকডাউনও জারি হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। রাজধানী দিল্লিতে সোমবার থেকে চলছে লকডাউন। মহারাষ্ট্রেও ‘করোনা কারফিউ’ চলছে। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে সপ্তাহান্তে চলছে লকডাউন। রাত্রিকালীন কারফিউ জারি হয়েছে দেশের বিভিন্ন শহরে। এর পাশাপাশি জোরেশোরে চলছে টিকাদান কর্মসূচি।

এদিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে লকডাউন থেকে দেশকে বাঁচানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, লকডাউন এখন কোনও বিকল্প নয়। মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটি বিষয়ের কথাই মাথায় রাখতে হবে। লকডাউন থেকে দেশকে বাঁচাতেই হবে। রাজ্য সরকারগুলোকে বলব লকডাউনকে তারা যেন শেষ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেন। বরং অগ্রাধিকার দিতে হবে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন তৈরি করে কোভিড মোকাবিলায়।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই যদি কোভিড প্রটোকল মেনে চলি, সহিষ্ণুতা ও সংযম বজায় রাখি, বিনা কারণে বাড়ি থেকে বের না হই, তাহলে লকডাউনের প্রশ্নই নেই। আমি আমার তরুণ বন্ধুদের বলব তারা যেন এই ব্যাপারটা সামাজিক মিশনের মতো গ্রহণ করেন। পরিবারের সদস্যদের পরিজনদের তারা যেন বোঝান যে বিনা কাজে, বিনা প্রয়োজনে কেউ যেন বাড়ির বাইরে না যায়।

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ যে একেবারে ঝড়ের মতো আছড়ে পড়েছে তা স্বীকার করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তবে বলেছেন, ভয় পাওয়ার কারণ নেই। অযথা যাতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মানুষকে আরও সতর্ক, আরও সচেতন হতে হবে।

মোদি ভাষণে উল্লেখ করেছেন, কোভিড মোকাবিলা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়। কেবল কেন্দ্রের সরকারেরও নয়। এখানে রাজ্য সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সমাজের প্রতিটি মানুষের অংশীদারিত্ব রয়েছে। প্রত্যেকে তার নিজের অংশটুকু দায়িত্বের সঙ্গে পালন করতে পারলে এই ঝড়ও কেটে যাবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.