Sylhet Today 24 PRINT

করোনাভাইরাস : সিঙ্গাপুরে আরও ৯৯ বাংলাদেশি আক্রান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ১১ এপ্রিল, ২০২০

সিঙ্গাপুরে নতুন করে আরও ৯৯ বাংলাদেশি প্রবাসীর মধ্যে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। শনিবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৫৪৪ জন বাংলাদেশি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া একইদিন সিঙ্গাপুরে এ ৯৯ বাংলাদেশিসহ মোট ১৯১ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন  বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করে।

সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২২৯৯ জন। আজ আরও ৩৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এই নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৫২৮ জন। ১১ এপ্রিল ৯০ বছর বয়স্ক সিঙ্গাপুরিয়ান নাগরিকের মৃত্যু হয়।

এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে আটজনের মৃত্যু হয়েছে৷আর একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ ফলাফল পাওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।

এ ছাড়া ১৯১ জন সবাই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছে৷ ৭২ জন পূর্বের ক্লাস্টারের কিংবা রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই অভিবাসীদের থাকার জায়গা ডরমিটরির সংযোগ রয়েছে। ১১৯ জনের তথ্য এখনো অজানা।

৯৪৩ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ৩১ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদেরকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে৷ ৮২০ জনের অবস্থা ক্লিনিক্যালি ভালো কিন্তু পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় তাদেরকে অন্য রোগীদের কাছ থেকে আলাদা রাখা ও যত্নের জন্য কনকর্ড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল, গ্লেনেগল হাসপাতাল এবং দ্য কমিউনিটি আইসোলেশন ফ্যাকাল্টি অ্যাট ডিজোর্টে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সিঙ্গাপুরে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। বেশিরভাগই এসেছেন দক্ষিণ এশিয়া থেকে এবং কাজ করছেন মূলত নির্মাণ শিল্পে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুরে অন্তত ৫০ হাজার প্রবাসীকর্মীকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করে তথ্যে দেখা যাচ্ছে।

সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশি হওয়ার কারণে এখন এই প্রশ্ন উঠছে যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট এই দেশটিতে এত বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সম্প্রতি একটি সেনাঘাঁটিতে কিছু কর্মীকে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে তাদের একই বাসে খুব কাছাকাছি বসিয়ে নেয়া হয়েছিল এবং নামার সময়ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেনি কেউই। সিঙ্গাপুরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজেই একটি ভিডিওতে একদল কর্মীকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

দেশটির দু’টি সেনাঘাঁটিতে অন্তত ১ হাজার ৩০০ কর্মীকে পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। আগামী ৪ মে পর্যন্ত তাদের সেখানেই বিশেষ নজরদারিতে থাকতে হবে। বাকি কর্মীদেরও বিভিন্ন খালি স্থাপনা, প্রদর্শনী কেন্দ্রসহ নানা জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে তাদের আর ডরমিটরির মতো গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে না।

গত সপ্তাহে করোনার বিস্তার মোকাবিলায় চার সপ্তাহের জন্য অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপ করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। ৪ মে পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব স্কুল, অনাবশ্যক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডরমিটরিগুলোতে খুবই কষ্টকর পরিবেশে দিন যাপন করেন প্রবাসীরা। গাদাগাদি করে ছোট ঘরে থাকেন, একই টয়লেট ব্যবহার করেন অনেকে। কোনো কোনো আবাসিক ভবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একটা ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমান ১২ জন করে শ্রমিক।

বেশ কিছু ডরমিটরিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে শ্রমিকদের ভেতরে থাকতে বলা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে শুরু হয়েছে এক মাসের লকডাউন। কর্মকর্তারা স্কুল ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করেছেন করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে। সরকার এসব ব্যবস্থা আরও আগে নিলে করোনাভাইরাস এভাবে ছড়িয়ে পড়তো না।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.