Sylhet Today 24 PRINT

ডিসিদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ কেন অবৈধ নয় জানতে রুল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষণা করে ৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন যে গেজেট জারি করেছিল, তা কেন ‘অবৈধ, অসাংবিধানিক ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।

বুধবার (১২ ডিসেম্বর) গত সপ্তাহে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করে।

তিন সপ্তাহের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন সচিব এবং নির্বাচন কমিশন সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচনের স্বার্থে রিটে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের পরিবর্তে ইসির জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের নির্দেশনা চাওয়া হলেও আদালত তা দেয়নি।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, আদালত রুল জারি করলেও জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে বাধা দেখছি না। আদালত নিয়োগ স্থগিত করেনি। তবে রুল শুনানির পর যে রায় হবে, তাতে কোনো নির্দেশনা থাকলে তা ভবিষ্যৎ নির্বাচনের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করলেও জাতীয় নির্বাচনে সাধারণত জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদেরই ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবারও ৬৪ জেলার ডিসি এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর বিরোধিতা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সপ্তাহ দুই আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যে সরকার দায়িত্বে থাকে, তাদের কথা বেশির ভাগ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের মেনে চলতে হয়। সে কারণে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ন্যায়বিচার করা সম্ভব হয় না।

এরপর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুর রহমান ৬ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন। সেদিন তার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী সাকিব মাহবুব। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বুধবার হাই কোর্টের আদেশের পর সাকিব মাহবুব সাংবাদিকদের বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের ৬৮৯ কর্মকর্তার মধ্যে থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা রয়েছে ইসির হাতে। এর বাইরে অন্য কাউকে ওই দায়িত্ব দেওয়ার এখতিয়ার ইসির নেই।

আব্দুর রহমানের করা রিট আবেদনে বলা হয়, ডিসিদের নির্বাচন পরিচালনাকারী হওয়ার সুযোগ নেই। এতে সাংবিধানিক বাধা রয়েছে। কারণ সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘‌নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’

এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জেলা প্রশাসকরা প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী বিভাগে কর্মরত আছেন। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে থাকেন। ফলে তারা সরাসরি নির্বাচন পরিচালনায় অংশ নিলে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।
 
সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের ৪ দফা উল্লেখ করে রিটে বলা হয়, 'দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন থাকবে। অতএব জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে এ দায়িত্ব অর্পণ করা উচিত।'

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.