Sylhet Today 24 PRINT

পাঠক ঘোষক হয় না

শাহআলম সজীব |  ১৩ জুন, ২০২০

বিভিন্ন দলিলপত্র কর্তৃক স্বীকৃত সত্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ। এনিয়ে কোন বিভ্রান্তি নেই ইতিহাসে এবং বাংলাদেশের মানুষের মাঝেও। তবু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক চলে স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে।

এই বিকৃত তথ্যের অপপ্রচার চালিয়ে আসছে বিএনপিপন্থী কিছু লোক। অথচ শুধু বিএনপিই না দেশের সবাই জানেন ২৫ মার্চের পাকিস্তানিদের অপারেশন সার্চলাইটের পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার বহুল প্রচারের জন্যে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান।

বিজ্ঞাপন

তারপর ২৭ মার্চ আবারও জনাব হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পুনরায় স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে। ২৭ মুক্তিযুদ্ধের আরেক সংগঠক আবুল কাসেম সন্দীপ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। সন্দীপ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দ্বিতীয় স্বাধীনতার পাঠকারী। আর তৃতীয় পাঠক হলেন মেজর জিয়াউর রহমান। মেজর জিয়া ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তারও অনেক ইতিহাস আছে এখানে।

মেজর জিয়া পাকিস্তানি জাহাজ সোয়াত থেকে অস্ত্র খালাসের দায়িত্বে ছিলেন। ওইদিন অস্ত্র খালাস করতে যান সঙ্গীসহ। পথিমধ্যে মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের সৈন্যরা জিয়ার গাড়িবহর দেখতে পান। ওই সৈন্যরা জিয়ার গাড়ি উড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেছিলেন কিন্তু মেজর রফিক অনুমতি দেননি।

পরে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠা বেলাল মোহাম্মদসহ কয়েকজন স্বাধীনতাকামী মেজর জিয়াকে বেতার কেন্দ্রে কিছু একটা বলার জন্য অনুরোধ করেন এবং মেজর জিয়াকে বেতার কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তারা বলেন যেহেতু আপনি মেজর, আপনার কণ্ঠে কিছু বললে সেনাবাহিনীতে এই বিষয়টা ভাল কাজ করবে। বেলাল মোহাম্মদসহ কয়েকজনে ড্রাফটও লিখে দিয়েছিলেন। ২৭ তারিখ মেজর জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।

এভাবে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে কাজ করা আরও অনেকেই বারবার বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন। বেলাল মোহাম্মদও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছেন। কিন্তু তারমানে এই নয় তারাও স্বাধীনতার ঘোষক !!

বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। যা ইপিআরের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সহ অনেক জায়গায় প্রচার হয়। অন্যদিকে ভাগ্যক্রমে মেজর জিয়া সেনাপ্রধান থেকে সেনাশাসক হয়ে যান। আর বদলে যেতে থাকে স্বাধীনতার ইতিহাস!

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.