Sylhet Today 24 PRINT

বাবলা এক দুর্দান্ত সাহসের নাম

সোশ্যালমিডিয়া ডেস্ক |  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতিত হওয়া দম্পত্তি যখন টিলাগড় পয়েন্টে এসে কাঁদছিলেন তখন তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা। তিনি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। যিনি বাবলা চৌধুরী নামেই পরিচিত। ধর্ষিতা তরুণীকে সহায়তার পাশাপাশি এই ঘটনা জনসম্মুখে নিয়ে আসা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতেও ভূমিকা রাখেন তিনি। 

এমন সাহসী ভূমিকার পর ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন বাবলা চৌধুরী। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তার প্রশংসা হচ্ছে।

বাবলা চৌধুরীই এমন বীরোচিত ভূমিকার প্রশংসা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তারই কৈশোরের বন্ধু, লেখক হাসান মোরশেদ।

ফেসবুকে এ প্রসঙ্গে হাসান মোরশেদ লেখেন-

২০ বছর পর আজ কথা হলো কৈশোরের বন্ধু বাবলা, বাবলা চৌধুরীর সাথে। বাবলা এমনই বন্ধু ছিলো, শিলং পড়তাম সময় সে দেখতে গিয়েছিলো আমাকে।

বাবলা এক দুর্দান্ত সাহসের নাম। ১৯৯৬ এর আগে যখন এমসি কলেজে ছাত্রদল-শিবিরের সন্ত্রাসের মুখে জয়বাংলা উচ্চারনও করা যেতো না, মিছিলে ১০ জনও থাকতো না তখন বাবলাকে দেখেছি- সন্ত্রাসের মুখোমুখি অটল দাঁড়াতে ছাত্রলীগের বাবলা। তার প্রতিরোধ অহিংস ছিলো সে দাবি করা সম্ভব নয়, কিন্তু আবেগ ছাড়া সে সময় প্রাপ্তিও কিছুর ছিলো না।

এতো বছর পর বাবলাকে ফোন দেয়ার উদ্দেশ্যে তাকে স্যালুট জানাতে। এমসি কলেজে ধর্ষিতা মেয়েটার স্বামী যখন টিলাগড় পয়েন্টে কাঁদছিলো, একটা মানুষ এগিয়ে যায়নি। বাবলা এগিয়ে গিয়ে বিস্তারিত জেনেছে। শুধু জেনেছে তাই নয়, সাথে লোকজন নিয়ে কলেজ হোস্টেলে ছুটে গেছে অপরাধীদের ধরতে, পুলিশকে বারবার ফোন দিয়ে  আনিয়েছে। পুলিশের ইতস্ততা, আরো দুএকজন নেতার সমঝোতার ফাঁকে ধর্ষকেরা পালিয়ে গেছে কিন্তু বাবলা প্রত্যেককে চিহ্নিত করেছে।

বিজ্ঞাপন



আমার বন্ধু বাবলা চৌধুরী বীর, বীরকে স্যলুট জানাতে হয়- তার পাশে দাঁড়াতে হয়।
 
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এবার কিছু খারাপ কথা বলি। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি ও তাঁর স্বামী আগামীতে বিপদে পড়তে যাবে, তাঁদেরকে নানা ভাবে হ্যানস্তা করা হবে, বিচার প্রক্রিয়া দুর্বল করার চেষ্টা করা হবে। একই সাথে বাবলাকেও ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। কারন বাবলা যদি বীরোচিত ভূমিকা না নিতো তাহলে এই ঘটনা প্রকাশ পেতো না। ধর্ষকদের পেছনের গডফাদাররা এই এলাকায় অনেকদিন থেকেই ড্রাগস, চাঁদাবাজির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে।

সারা বাংলাদেশে যারা এই ঘটনার প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন তাদের কারনেই দ্রুততম সময়ে ছয়জন ধর্ষক গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়।

সকল এক্টিভিস্ট, নারীবাদী সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, মিডিয়া এমনকি ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগকে এসে পাশে দাঁড়াতে হবে নির্যাতিত নারী ও তার স্বামী এবং অবশ্যই বাবলার পাশে। যতোদিন সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না হচ্ছে ততোদিন হাল ছাড়া যাবে না।
 
সবাই মিলে অন্ততঃ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। নির্যাতিতরা ন্যায় বিচার না পেলে আমাদের সকলের পরাজয়, বাবলা চৌধুরীর সাহসের স্বীকৃতি না পেলে আর কেউ সাহস পাবে না অন্যায় প্রতিরোধের।

আসুন, ধৈর্য্য ধরে আমরা সবাই তাদের পাশে দাঁড়াই।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.