Sylhet Today 24 PRINT

যে কারণে হেফাজত থেকে মানুষের মুখ ফিরিয়ে নিলো

শাহআলম সজীব |  ০৫ মে, ২০২১

৫ মে, ২০১৩; সেদিন বিএনপি নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, "হেফাজত আমাদের মেহমান। বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করুন।" প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে শরবত নিয়ে মেহমানদারি করেছিলেন। বিএনপি জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামিসহ যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলো। বিএনপি জোটের দলগুলো হেফাজতে ইসলামের পক্ষে নানান প্রোপ্যাগান্ডা চালিয়েছিল। মিথ্যাচার অপপ্রচার করে মাদ্রাসা ছাত্রদের রাজপথে নামিয়ে এনেছিলো। জামায়াত-বিএনপি সেদিন ধরেই নিয়েছিল, "সরকার পতন হবে এবং তারা ক্ষমতায় যাবে।"

সেদিনের সেই নারকীয় তাণ্ডবের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কঠোর কণ্ঠে বলেছিলেন, "সন্ধ্যার মধ্যে শাপলা চত্বর ত্যাগ করুন, নইলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।" তারপর সবই ইতিহাস।

শাপলা চত্বর থেকে হেফাজত চলে যাওয়ার পরও থেমে থাকেনি সরকার বিরোধীদের মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার। বলা হলো হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। যখন চ্যালেঞ্জ করা হলো তখন তারা ৬২ জনের একটি তালিকা দিলো। যাদের নাম দেওয়া হলো, দেখা গেলো ৫ মে সেদিন তাদের অনেকেই শাপলা চত্বরে যায়ইনি। নিখোঁজ বা মরে যাওয়া অনেকেই মাদ্রাসায় ক্লাস করছে।

মিথ্যাবাদীদের দল হাইতির ভূমিকম্পে নিহত মানুষের ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালালো। ধর্মের দোহাই দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের পাশাপাশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সরলতার সুযোগ নিয়ে, তাদেরকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করে রাজপথে নামিয়ে নিয়ে এসে ধ্বংসলীলা চালালো। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করেছিল। শতশত গাছ কেটে ফেলা হলো। বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের দোকানগুলোতে আগুন দেয়া হলো, সেই আগুনে অনেক কোরআন শরিফও পুড়েছিলো!

আজও হেফাজতি দানবদের নারকীয় তাণ্ডব চলছে সারাদেশে। সেদিন থেকে ওই দানবগুলো শিক্ষা নেয়নি। পবিত্র ইসলাম ধর্মকে হেফাজতের নামে ওরা অপরাজনীতি করছে, দেশকে অস্থিতিশীল করছে, সরকারকে হটিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বারবার।

সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বুঝা উচিৎ 'ইসলামের হেফাজতকারী স্বয়ং আল্লাহতায়ালা; কোনো ধর্ম ব্যবসায়ী নয় কিংবা ধর্মের নামে অপরাজনীতি করা আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা নয়।

পাশাপাশি মাদ্রাসার ছাত্রদেরও বুঝা উচিত, তাদের হুজুররা তাদের কোন কাজে ব্যবহার করছে? ওইসব হুজুররা আওয়ামী বিরোধীদের কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়ে নিজেরা ভোগবিলাসিতা করছে, আর সাধারণ ছাত্রদের দিয়ে দেশে নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা কেন তাদের হুজুরদের দ্বারা ব্যবহৃত হবে। দেশবিরোধী এবং সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে। দেশের সম্পদ কেনো আগুনে পুড়াবে, কেনো সাধারণ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারবে?

আজ জামাত বিএনপি ও তাদের সমর্থক ছাড়া সারাদেশের মানুষ হেফাজতের কথিত আলেমদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর কারণ কী? মাদ্রাসার ছাত্র ও সাধারণ মানুষদের এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখা উচিৎ বলে মনে করি ......

শাহআলম সজীব: সদস্য, বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.