Sylhet Today 24 PRINT

কওমি মাদ্রাসার অনাথ শিশুদের নিয়ে যা বললেন অভিনেত্রী বন্যা মির্জা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ মার্চ, ২০২৪

সম্প্রতি কওমি মাদ্রাসার অনাথ বাচ্চাদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান একটি স্ট্যাটাস (সংগৃহীত) শেয়ার দেন। নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়ায় সে স্ট্যাটাস। এবার সেই স্ট্যাটাসের রেশ ধরে নিজের অবস্থান তুলে ধরলেন আরেক গুণী অভিনেত্রী বন্যা মির্জা।

অভিনেত্রী বন্যা মির্জা লিখেন:
মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অনেকের বিদ্বেষ লক্ষ্য করি। কেউ মাদ্রাসাতে পড়েছেন শুনলে অনেকেরই নাক সিটকানো আমি কাছ থেকে দেখেছি। অথবা সেটা নিয়ে গণমাধ্যমে, টক-শোতেও কথা বলেন অনেকে এবং অবশ্যই পক্ষে নন তাঁরা এই শিক্ষাব্যবস্থার। আমার কোন সমস্যা হয় না। বা আমার এই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলাদা কোন অবস্থান নেই।

কেননা, রাষ্ট্র এই ব্যবস্থাকে বৈধতা দিয়েছে এবং রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনায় সেটা বহাল আছে। যদি কারো কোন সমস্যা হয় তাহলে তাঁরা কথা বলবেন রাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। আলাদা করে একটি বিশেষ শিক্ষাপ্রণালীকে অকারণ গালাগালকে আমি দায়িত্ব এড়ানোর আলাপ মনে করি।

যে কারণে লিখছি তা হলো অনেকেই কওমি মাদ্রাসার সাথে যুক্ত এতিমখানার বাচ্চাদের জন্য ফেসবুকে মমতা ছড়াচ্ছেন, হ্যাঁ অনেকেই। আমি অন্তত ১০ জনের পোস্ট দেখেছি। তাই নির্দিষ্ট ব্যক্তি আমার লক্ষ্য না। আর লেখাটি সংগৃহীত। কেউ লিখেছেন, আর সেটা কপি করা হচ্ছে।

যিনি এই দয়াবান ব্যক্তি, তাঁর জন্মসূত্রে মানুষের জন্য দয়া দেখানোর অধিকার আছে। নিষ্ঠুরতা নিশ্চয় আমাদের প্রত্যাশিত নয়। তবে দয়াবান ব্যক্তির যে ভুল তা হলো মাদ্রাসা হলো স্কুল, সেটা কোন থাকার জায়গা না। হতে পারে যে মাদ্রাসার সাথেই এতিমখানা আছে বা থাকে। কারণ সেখানে বেশিরভাগ গরিব লোকের বাচ্চারা পড়ে। আর সাধারণভাবে রেসিডেন্সিয়াল মাদ্রাসাগুলোতে অনেক টাকা লাগে পড়তে। আর কওমি শিক্ষার সাথে মাদ্রাসা থাকেই, সেখানে বড়লোক ও গরীব লোকের বাচ্চারা একসাথেই পড়ে ও থাকে। ছুটির সময় কেউ কেউ তাই বাড়ি যেতে পারে না। পরিবার থাকলেও না যেতে পারে, কারণ ঈদ সবাই একইভাবে করবার সামর্থ্য রাখে না। আর ঈদে আইসক্রিম বা চকলেট দিয়ে ভালোবাসা কেমন হবে সেটা যে ভালো বুঝলাম তাও না। তারচেয়ে ভালো হতো আপনি নিজে গিয়ে সেসব বাচ্চাদের সাথে সময় কাটিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারতেন। বা তাদের আপনার সাথে আপনার পরিবারের সাথে সময় কাটানো ব্যবস্থা করতেন।

আমার আরও একটি কথা আছে, তা হলো এই বিদ্বেষ ও মায়ার যে সংমিশ্রণ তার বুনিয়াদ আমাদের মহত্ত্বের লোভ এবং এটা ভয়ানক লোভ, যেখানে টাকা, গাড়িবাড়ি, সম্পত্তির লোভও অতি তুচ্ছ। আর এতিমখানাগুলো আপনার বা আমাদের টাকাতেই বানানো। পথে চলতে গিয়ে গাড়ির গ্লাস খুলে  হাজারে হাজারে ১০ টাকা ২০ টাকার যোগফল। এবং এই এতিমখানার কাজটি যে কোন ব্যক্তি বা সম্মিলিত উদ্যোগে হতেই পারে। আমরাও মহৎ হবার লোভে টাকা দিতেই পারি। কিন্তু যে কাজটি রাষ্ট্রের করার কথা সেটি রাষ্ট্র কতটা ঠিকভাবে করল? এই প্রশ্নটাও তো রাখতে পারতে হবে।

মাদ্রাসার সাথে এতিমখানাগুলো বরং খানিক  সেই কাজটা করে। রাষ্ট্রায়ত্ত এতিমখানাতে আপনারা একবার দয়া করে যাবেন। এবং ব্যক্তি/সম্মিলিত উদ্যোগের এতিমখানাগুলোর কোনটাতে যাবেন। নিজে বুঝে নেবেন পার্থক্য কী ও কোথায়?

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.