সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | ২০ নভেম্বর, ২০২৫
দ্বীপ ও ধ্রুব। এইসব ছবি এখন কেবলই স্মৃতি
হবিগঞ্জের বাহুবলের পুটিজড়িতে গ্রামের বাড়িতে বুধবার সিলেটের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর দীপঙ্কর দাস দ্বীপের অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
এরআগে ভোরে সিলেট নগরের গোপাটিলা এলাকায় তাদের বাসার সামনে কিছুসময়ের জন্য আনা হয় দ্বীপের মরদেহ। অকাল প্রয়াত এই তরুণকে একনজর দেখতে দুই জায়গায়ই ভীড় করেন বহুমানুষ। দ্বীপের বাবা-মা-ভাইয়ের কান্নাও হৃদয় ছুঁয়ে গেছে তাদের।
দ্বীপকে হারিয়ে মুষড়ে পড়েছেন তার একমাত্র ছোট ভাই দিবাকর দাস ধ্রুব। ভাইয়ের এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তিনি। বুধবার বড় ভাইকে শেষবিদায় জানিয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেন-
ভাবতেই পারিনি আমার ভাইয়ের সঙ্গে শেষ দেখা এভাবে হবে… এইভাবে চোখের সামনে শেষবারের মতো তাকে দেখতে হবে—এটা তো কখনো কল্পনাও করিনি। আজও মনে হয়, দরজা খুলে সে হাসিমুখে ডাকবে, কিন্তু তারপরই বাস্তবতা মনে করিয়ে দেয়—তুই আর আমাদের মাঝে নেই ভাই।তুই ছিলি আমার জীবনের শক্তি, শান্তি আর সবচেয়ে কাছের মানুষ। তোর অভাবটা এমনভাবে হৃদয়ে বিঁধে আছে, যা কোনোদিনও মুছে যাবে না। তুই আমার হৃদয়ে, আমার প্রতিটি স্মৃতিতে, প্রতিটি প্রার্থনায় চিরদিন বেঁচে থাকবি ভাই। যেখানেই থাকিস—ভালো থাকিস, শান্তিতে থাকিস।
একটাই অনুরোধ—আপনারা কেউ ভুলে যাবেন না আমার ভাইকে। মানুষের ভালোবাসায়ই একজন মানুষ বেঁচে থাকে, আর আমার ভাই সেই ভালোবাসারই যোগ্য।
এরআগে বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৯টায় মরদেহ নেওয়া হয় হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুড়ি গ্রামের বাড়িতে। সেখানে স্বজন, বন্ধু ও এলাকাবাসীর কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ছুটে আসেন তাকে শেষবারের মতো দেখতে।
গত ১২ নভেম্বর (বুধবার) ভোরে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান একুশ বছরের তরুণ দ্বীপ। তার আকস্মিক মৃত্যুতে নেমে আসে শোকের ছায়া।
মঙ্গলবার ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে দীপের মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে গাড়িযোগে সিলেটে আনা হয় মরদেহটি। রাত ৩টার দিকে মরদেহ পৌঁছালে গোপালটিলায় শোকে স্তব্ধ হয়ে যান পরিবার-পরিজন ও এলাকাবাসী। সকাল থেকে হাজারো মানুষ ভিড় করেন দীপের মরদেহের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
দ্বীপের পরিবার সিলেটের গোপালটিলায় থাকেন। তবে তাদের মূল বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবলের পুটিজুড়িতে । তার বাবা দিব্যোজ্যোতি দাস। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় দ্বীপ।
দ্বীপের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দিবাগত রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে বুধবার ভোর ৫ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দ্বীপ।
দ্বীপ ফেসবুকে পারিবারিক বিভিন্ন ইস্যুতে হাস্যরসাত্মক কনটেন্ট তৈরি করতেন। তাতে দ্বীপের সাথে তার মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও অংশ নিতে দেখা যেতো। হাস্যরসাত্মক এসব ভিডিও করে জনপ্রিয়তা পান তিনি।