Sylhet Today 24 PRINT

সহপাঠীদের মিলনমেলায়...

তারেক আহমেদ চৌধুরী |  ১৮ মার্চ, ২০১৬

সালটা ছিল ১৯৯৪। এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে সবাই চলে গেল বিভিন্ন কলেজে। ১০ / ১১ বছরের বন্ধুত্বের অটুট বন্ধন এক পলকেই ছিন্ন হয়ে যায় সেদিন। কেউ কেউ দুঃখ কষ্ট পেয়ে বন্ধুদের ছেড়ে যায় বা যেতে ই হয় কারণ সবারই তখন নতুন জীবনে পদার্পণের রয়েছে তাড়া।

কলেজ জীবন শুরু করে হয়তো কিছু কিছু বন্ধুদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ থেকে যায়। সবার একসাথে যোগাযোগ হয়ে আর ওঠেনা। মাঝে মধ্যে কোনো কোনো বন্ধুদের সাথে রাস্তায় দেখায় হয়ে যায়।  হাই-হ্যালো, কেমন আছিস এটুকু পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে কথা। আর আগের মতো করে আড্ডা দেওয়া আর হয়ে ওঠেনা।

আস্তে আস্তে কলেজ জীবন শেষ হয়। কেউ চলে যায় বিদেশে। কেউবা চাকুরী, কেউ ব্যবসায়। জীবনের গহীনে ডুবে যায় সবাই। ব্যস্ত হয়ে যায় কঠিন জীবনে। বেশিরভাগের জীবনে চলে আসে নতুন অতিথি।  বিয়েশাদী করে বাচ্চাকাচ্চা আর সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায় সবাই যে যার মত করে। এখন বয়েস কম বেশি সবারই চল্লিশ বা তদূর্ধ্ব।  ইতিমধ্যে  বুকের ভেতর মোচড় দেয় স্কুল বন্ধুদের জন্য। কয়েকজন এর সাথে যোগাযোগ ইদানিং কিছুটা বাড়ায় হঠাৎই মনে হলো সবাই আরেকবার আড্ডা দেই।
আড্ডাছলে ফিরে যাই স্কুল পড়ুয়া ছাত্র জীবনে।

জীবন এর কয়দিন ই বা বাকি। এই সামাজিক যোগাযোগ এর অনেক মাধ্যম থাকা অবস্থায় কেন আবার আমরা সেই কৈশোরের বন্ধুদেরকে এক করতে পারিনা? মাথায় চিন্তাটি আসার পরই যোগাযোগ করি সুমন এবং অমলেন্দু মুন্নার সাথে। পরিকল্পনার কথা জানাতেই ওরাও বলে তাদের ইচ্ছের কথা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে খুলি রসময় মেমোরিয়াল হাই স্কুল ৯৪ ব্যাচ নামে একটি গ্রুপ। এরই মধ্যে গ্রুপে হাজির হয় ইসমত ও মুছা। বিদেশ থেকে হাজির হয় ফয়সল,কাইয়ুম ,ফারহান, জহির, মাহবুব। তাদের  সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এক সপ্তাহে গ্রুপ এ দেশ বিদেশ থেকে গ্রুপটিতে সামিল হয় ৩৫ জনের মতো আমাদের স্কুল সহপাঠীরা।

দেশের সবার সাথে কথা বলে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) আমরা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজন করি কৈশোরের সহপাঠীদের মিলন মেলার।  স্বল্প সময়ের নোটিসের আয়োজনে দেশে উপস্থিত থাকা পঁচিশ জন বন্ধু জড়ো হয়। একজন আরেকজনকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়।  বুকে জড়িয়ে ধরে একে অপরকে।  হারিয়ে যায় সেই স্কুলবেলায়।

আলাপচারিতায় উঠে আসে পরম শ্রদ্ধেয় স্যারদের কথা। বিশেষ করে মরহুম ফখরুল ইসলাম স্যার (হেড স্যার), অরুণ বাবু সার, সেলিম স্যার, তাজুল ইসলাম স্যার , আফতাব স্যার,  আলম স্যার , গিরিন্দ্র স্যার , পুলিন স্যার , মৌলানা স্যার , পণ্ডিত স্যারসহ বাকি সব স্যারদের কথা।

আড্ডাছলে  সবার কথায় ওঠে আসে খুনসুটি দুষ্টামি, খেলাধুলা, পড়াশুনা সব কিছুতেই এগিয়ে ছিল ৯৪ ব্যাচ।  

আমরা সহপাঠীরা ঠিক করেছি যেই স্কুল আমাদের মেধা দিয়েছে সেই স্কুলের সাথে এবং সেই সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধন যেন আর ছিঁড়ে না যায়।  সেই জন্য একটা সেতুবন্ধনের সৃষ্টি  করব.আমরা। স্কুলের কাছে আমাদের বন্ধুত্ব ঋণী। এই ঋণ শোধ হবার নয়।

আজকের মিলন মেলায় উপস্থিত ছিল  সুমন, রাসেল,জয়দেব,শামসুল ,অপু, অমলেন্দু মুন্না, রাজু, আম্বিয়া, দেবব্রত লিটন, সুরজিত, সুভাষ, লিটন, দিলওয়ার, ইসমত, সুধীর ও শাহীন। আমরা বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ থেকে ফিরে যেতে চাই সেই শৈশবের দিনগুলোতে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.