Sylhet Today 24 PRINT

‘পরিচয়হীন মানুষেরা পরিচয় পাক’

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক |  ০৫ এপ্রিল, ২০১৬

সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায়ই কিছু মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষ দেখা যায়। যাদের আসলে কোন স্বজনের খোঁজ নেই, পরিচয় নেই জানা। কবে কোথায় থেকে তারা এসেছে স্পষ্ট বলতে পারে না কিছু। শাস্ত্রী নামে সেরকম একজন মানুষের কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন শিক্ষক এম.এন ইসলাম রেজা। তিনি লিখেছেন:

শাস্ত্রী হ্যাঁ তার নাম শাস্ত্রী, তবে লালবাহাদুর শাস্ত্রী নয়।
গতকাল (৩ এপ্রিল) ইমরান আহমদ মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে পরীক্ষা ডিউটি শেষে যখন ফিরছিলাম তখন তাকে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে থাকতে দেখে  সাথে কথা বলার চেষ্টা করি, কথা বলে বুঝতে পারলাম সে কোন এক সময় ভারত থেকে তামাবিল হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বর্তমানে জৈন্তাপুরে অবস্থান করছে, তাকে অবশ্য ৬/৭ বছর থেকে জৈন্তাপুরে দেখা যাচ্ছে।

সে একজন মানসিক রুগী, তাছাড়া শারীরিক ভাবে ও সুস্থ নয় বাহ্যিক ভাবে যা বুঝা যায় তাতে মনে হয় স্থায়ীভাবে একশিরার সমস্যা আছে, শ্বাস কষ্ট, কফ কাশির মতো রোগে আক্রান্ত। অনিয়মিত খাবার নিদ্রাহীনতায় সেআরো অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাচ্ছে।

কখনো কখনো তার স্মৃতি ফিরে পেলে তার অতীত কে কিছুটা মনে করতে পারে সে ভারতীয় কিছু স্থানের নাম বলল আসামের গুহাটি,শিলং পাটনা, জমশেদপুর বিভিন্ন স্টেশনের নাম বলতে পারে অনেক আগে শুধু হিন্দি ভাষায় কথা বলত ও গান গাইতে শুনা যেতো বর্তমানে কিছু বাংলা কথা ও বাংলা গান সময়ে সময়ে গাইতে শুনা যায়। সে সবার নিকট পরিচিত, তাকে সবায় মায়ার দৃষ্টিতে দেখে, সারাদিন বিভিন্ন যায়গায় ঘুরে ফিরে দোকান কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দায় শুয়ে থাকে।
তার নিকট কথা বলেআরো যা বুঝলাম তা হলো সে তার নিজ স্থানে ওআপন জনের কাছে যেতে চায় কিন্তু কিভাবে যাবে এবং কাকে কিভাবে বুঝাবে সেই স্মৃতিপথ তার নেই।

আমাদের মানব সমাজে এমন কিছু মানুষ ঘোরে ফিরা করছে তাদের ও কোন জন্মদাতা পিতামাতা ভাইভ্রাতা পরিজন ছিল বা আছে, কিন্তু কোথায় আছে? কেমন আছে? তারা জানে না, হয়তো তাদের পরিজনেরা খোঁজে খোঁজে দিন মাস বছর পার করছে স্বজনের আশায়, একদিন হয়তোবা নিখোঁজের তালিকা থেকে মৃত্যুর তালিকায় স্থান পাবে।

এই কি নিয়তি এরাও তো মানুষ এরাও কারো সন্তান কারো স্বজন। জৈন্তাপুরে আমার আগমন প্রায় ১৫ বছর এযাবৎ যা দেখলাম তাতে মনে হয় বিভিন্ন স্থান হতে আগত পাগল/ মানসিক রুগী খুব বেশী আগমন ঘটে এদের মধ্যে ভারত থেকে আসা লোকদের সংখ্যাই বেশি, এদের মুখের ভাষা হিন্দি বা অন্যান্য উপজাতি ভাষা লক্ষ্য করা যায়।

সীমান্তবর্তী উপজেলা ওপাশে স্থলবন্দর থাকায় খুব সহজেই তাদের কে বাংলাদেশে পুশইন করে দেয় বর্তমানে ও বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ জৈন্তাপুরে অবস্থান করছে, এসব অপ্রকৃতিস্থ লোকদের আগমনের প্রাক্কালে যদি সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটু সজাগ দৃষ্টি রাখে তবে তা প্রতিহত করা সম্ভব।

আমরা এসব মানুষদের মানবিক মর্যাদার পাশাপাশি পরিচয়হীনদের পরিচয় ফিরে পাক ও স্বজনদের স্ব-যতনে জীবন হোক সুস্থ ও আনন্দময়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.