Sylhet Today 24 PRINT

‘জঙ্গি নিয়ে আর কাজ নয়, এখন করবো যুদ্ধ’

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক |  ০৭ জুন, ২০১৬

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার পর জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন।  তারই ইঙ্গিত দিলেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিস্পোজাল টিমের প্রধান ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. ছানোয়ার হোসেন।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেশে সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গিদের আস্ফালন নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি লিখেন,  হ্যা, আমি আর জঙ্গি-ফঙ্গিতে নাই। অনেকেই তো পুলিশের চাকুরী করে, কিন্তু সবাই কি জঙ্গি নিয়ে কাজ করে? করে না। তাহলে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমি কেন করবো? আমিও অন্য কোন বিভাগে চলে যাচ্ছি। কে চায় পেশাগত দায়ীত্ব পালনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের হারাতে? কেউ না, তাই আমিও না। ঠিক এই রকম একটি সিদ্ধান্তই দেখতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই শুনিয়ে দিলাম। তবে শুধু শুনানোর জন্য নয়, আমি আসলেই জঙ্গি নিয়ে আর কাজ করবো না। যেটা করবো সেটা হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করবো। আগে করতাম কাজ, এখন করবো যুদ্ধ।.

এরপর বিস্তারিত ব্যখ্যা দিয়ে পোষ্টে তিনি লিখেছেন:

#‎জঙ্গি_নিয়ে_আমি_আর_কাজ_করবো_না‬

হ্যা, আমি আর জঙ্গি-ফঙ্গিতে নাই। অনেকেই তো পুলিশের চাকুরী করে, কিন্তু সবাই কি জঙ্গি নিয়ে কাজ করে? করে না। তাহলে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ আমি কেন করবো? আমিও অন্য কোন বিভাগে চলে যাচ্ছি। কে চায় পেশাগত দায়ীত্ব পালনের দায়ে পরিবারের সদস্যদের হারাতে? কেউ না, তাই আমিও না।

ঠিক এই রকম একটি সিদ্ধান্তই দেখতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। তাই শুনিয়ে দিলাম। তবে শুধু শুনানোর জন্য নয়, আমি আসলেই জঙ্গি নিয়ে আর কাজ করবো না। যেটা করবো সেটা হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করবো। আগে করতাম কাজ, এখন করবো যুদ্ধ।... কাজের পরিবেশ তো আর নেই, যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেছে। পরিবারের নিষ্পাপ সদস্যের উপর আঘাত, যুদ্ধ না তো কি? তাই এখন জঙ্গি নিয়ে কাজ মানেই যুদ্ধ।

‪#‎একটু_বিশ্লেষণে_যাচ্ছি‬:
পুলিশ আর অপরাধীর মধ্যে সাপে-নেওলে সম্পর্ক সব দেশেই আছে। দেশে দেশে কুখ্যাত মাফিয়াচক্রের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈরিতা সবথেকে চরম। এই মাফিয়ারাও একে অপরকে বলে থাকে:

‪#‎Never_Ever_Touch_A_Cop‬
(কখনও পুলিশের গায়ে হাত দিও না)

পুলিশের গায়ে হাত দিলে কি বিপর্যয় হয়, আর পুলিশের আইনগত দায়ীত্ব মেনে নিলে কি ক্ষতি হয়, তার তুলনামূলক হিসাব তাদের আছে। তাই সচরাচর কোন দেশেই পুলিশের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কেউ জড়ায় না। তারপরও কখনও কখনও তারা পুলিশের উপর হামালা চালায়। কিন্তু পরিবারের কোন ক্ষতি করে না। এটা তাদের ‪#‎থাম্ভ_রোল‬।

এদেশের জঙ্গিরা এখন সেই 'থাম্ভ রোল'-এর অনেক নীচে নেমে গেছে। পুলিশসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর উপর হামলা তো করছেই, বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের উপরও হামলা শুরু করে দিয়েছে। তা না হলে আর জঙ্গি/জংলি বলা হয় কেন।

অথচ, বিভিন্ন সময় জঙ্গি পরিবারের অন্যান্য নিষ্ক্রিয় সদস্যরা সনাক্ত হলেও তাদের ইজ্জত করা হয়। তাদের পরিবারের পর্দানশীল নারী, ছোট ছোট বাচ্চা এবং বয়োবৃদ্ধদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।.... তাহলে ওরা কেন এমন করছে?
তাহলে ওরাই বা কারা?

প্রশ্নের জবাব খুব তাড়াতাড়ি আসছে.... ইনশাল্লাহ। দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে সে যে-ই হোক। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই '৭১ থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের নিরাপত্তা দিতে গিয়ে পুলিশের যতটুকু গেছে তা আর অন্য কোন পেশায় যায়নি। এই ত্যাগটুকুই পুলিশের অনেক সীমাবদ্ধতা আর ভুল-ত্রুটিগুলোকে লেভেল করে দিচ্ছে। সামনে উদ্বৃত্ত কিছু রাখার জন্য কাজ হচ্ছে।

আশা করি জঙ্গিবাদ (আমি বলি উগ্রবাদ) সমূলে উৎপাটনে আমাদের নিষ্পাপ 'ভাবী'র এই মূল্যবান রক্ত আমাদের কাজের গতি, ক্ষিপ্রতা এবং অনুপ্রেরণা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। দেশের নিরাপত্তামূলক কাজের জন্য ভাবীকে হারালাম, ভাবী ‪#‎শহিদের_মর্যাদা‬ পাবেন।

তাই প্রতিশোধ নয়, উৎপাটন হোক আমাদের অঙ্গীকার। ঠান্ডা মাথায় কিভাবে যুদ্ধ করতে হয় তা শুধু পুলিশই জানে, তাই এখনই শুরু করার পালা।


টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.