Sylhet Today 24 PRINT

অপসাংবাদিকতার বিরোধিতা করুন, কিন্তু সবাইকে হার্ট করবেন না

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক |  ২৭ জুন, ২০১৬

বাবুল আক্তাকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ইস্যুতে একাধিক অনলাইন মিডিয়ার রিপোর্ট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এই ইস্যুতে অনেকেই সাংবাদিকদের ঢালাও সমালোচনা করছেন। তবে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান মামুনের আহ্বান- 'অপসাংবাদিকতার বিরোধিতা করছেন, করুন। কিন্তু সবাইকে হার্ট করে লিখবেন না'। এভাবে ঢালাও সমালোচনা করে সাংবাদিকতাকে দুর্বল না করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রোববার ফেসবুকে হাসান মামুন লিখেন-

একটি নিউজ পোর্টালের 'সাংবাদিকতা' নিয়ে ফেসবুকে দেখি অনেকে সমালোচনা করছেন। যথারীতি গালমন্দই বেশি দেখতে পাচ্ছি। অনেকে এ সুবাদে ঢালাওভাবে দোষারোপ করছেন সাংবাদিকদের।

দুর্বল সাংবাদিকরাও মাঝে মাঝে এ কাজটা করেন। গোটা পেশার বিরুদ্ধে কিছু একটা লিখে বা বলে বসেন। আমার প্রথম বস বজলুর রহমান সাহেব বলতেন, 'ককখনো ঢালাওভাবে লিখবে না। ওই প্রফেশনে একজন মানুষও যদি ঠিক থাকেন, তিনি হার্ট হবেন'।

ফেসবুকে যারা ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের গাল দিচ্ছেন, তাদের বলি--আমার চেনাজানা অন্তত ৫০ জন সাংবাদিক রয়েছেন, যারা নিতান্ত বাধ্য না হলে ককখনো ওইভাবে নিউজ করবেন না। এরা ঘৃণা করেন অপসাংবাদিকতাকে এবং নিজ নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে এ প্রবল শক্তির সঙ্গে লড়াই করছেন তারা। হলপ করে বলতে পারি, অন্য পেশায় গেলে এর অন্তত ৫০ শতাংশ জীবনযাত্রার দিক দিয়ে অনেক ভালোভাবে থাকতে পারতো। এদের একাংশ আবার সমস্যাদির কথা জেনেবুঝেই বেছে নিয়েছে পেশাটিকে।

আলাদা করে কোনো পেশাই তো সাফ-সুতরো থাকবে না, ভাই। 'মহান পেশা' বলে বর্ণিত শিক্ষকতাও কী ঠিকঠাক আছে? আমি কিন্তু মনে করি, অধিকাংশ সাংবাদিক এখনো ওই ৫০ জনের মতো।

অপসাংবাদিকতার বিরোধিতা করছেন, করুন। কিন্তু সবাইকে হার্ট করে লিখবেন না, প্লিজ।

মিডিয়ার কাছে আপনাদের প্রত্যাশা খুব বেশি, এটা বুঝতে পারি। কিন্তু আপনাদের অনেকে ঠিক বুঝতে চান না, সাংবাদিকরা কী পরিস্থিতিতে কাজ করেন আর নতুন করে কীসের মধ্যে পড়ছেন। চলতি রাজনীতি ও ব্যবসার জগৎ থেকে তো একে আলাদা করতে পারবেন না। গত কয়েক দশকে এখানে প্রবলভাবে উপস্থিত হয়েছে মালিকপক্ষ। মিডিয়ার বাইরের ক্ষমতাবান নানা গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কথাও কি জানেন না?

আপনারা বরং এর গঠনমূলক সমালোচনা করুন। যেটুকু সাংবাদিকতা হচ্ছে, নিজ স্বার্থে সেটা রক্ষা করে একে শক্তিশালী করতে প্রয়াসী হোন। নইলে যেটুকু গণতন্ত্র রয়েছে, সেটাও টিকবে না।

সত্যি বলছি, ওই ৫০ জন সাংবাদিক সক্রিয়ভাবে না থাকলে ঘর থেকে বেরুতে পারবেন না। ঘরেও থাকবে না নিরাপত্তা।

সাংবাদিকতাকে দুর্বল করবেন না।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের এসপি বাবুল আক্তারকে শুক্রবার (২৪ জুন)  মধ্যরাতে শ্বশুরের বাসা থেকে নিয়ে যায়। প্রায় ১৫ ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বিকেলে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে শনিবার দিনভর কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ।

এসময় স্ত্রী মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে প্রতিবেদন করে একটি অনলাইন পত্রিকায়। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। যদিও পরে প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে নেয় ওই অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.