Sylhet Today 24 PRINT

বঙ্গবাহাদুর ও বঙ্গলোকের রঙ্গ!

রাজু আহমেদ |  ১৬ আগস্ট, ২০১৬

দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকার ভাষ্যমতে, দেশবাসীকে কাঁদিয়ে বড় অবেলায় চলে গেলো বঙ্গবাহাদুর! দেশবাসীর কতজন কেঁদেছে তার হিসাব গণমাধ্যম করুক, আমরা বরং একটু রঙ্গ করে আসি।

ছোট বেলায় শুনেছি, হাতি বাঁচলেও লাখ টাকা আর মরলেও লাখ টাকা! জন্মসূত্রে বঙ্গবাহাদুর যেহেতু বাংলাদেশের নয় বরং আসামের, তাই লাখ টাকার ভাগ-বাটোয়ারা কি ধরনের ওয়ারিশসূত্রে হবে-এবার তার একটা হিল্লে হওয়া দরকার!

জাতির সকল জাতীয় বুদ্ধিজীবীদের এ মহৎ কাজে গবেষণা ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান বিনিয়োগ করা উচিত!

প্রথম আলোসহ যারা বঙ্গবাহাদুরের সকল খবরা-খরব সেকেন্ডে সেকেন্ডে দেশবাসীকে জানানোর জন্য তাদের শক্তির সবটুকু উজাড় করেছে তারা লাখ টাকার ভাগ পেতেই পারে! পাওয়াটাই তাদের ন্যায্য অধিকার!

বঙ্গবাহাদুরকে নিয়ে যারা অতিরিক্ত লম্ফ-জম্ফ করেছে তাদের সবার ভাগে মাত্র লাখ টাকা বাটোয়ারা করলে তাদের ভাগে নেহায়েত কম পড়বে। তাই, যে বানের জলে বঙ্গবাহাদুর ভেসে এসেছিল, সেই বানের জলে এখন যারা ভেসে আছে-যাচ্ছে, তাদের থেকে চাঁদা তুলেও কিছু পয়সা-কড়ি বিভিন্ন মিডিয়াকে দেয়া উচিত।

বঙ্গবাহাদুরের জন্য তারা এতকিছু করলো, আর আমরা তাদের জন্য কিছুই করবো না? যারা ১৬ ডিসেম্বরকেও শোক দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যস্ত তাদেরকে সামান্য পয়সা-কড়ি বখশিশ না দিলে সেটা মারাত্মক গোস্তাখী হয়!

প্রথম আলোর প্রথম চোখে দেখা, বঙ্গবাহাদুরের মায়ায় যে সকল দেশবাসীর চোখের পানিতে বান ডেকেছে তাদের জন্য সামান্য টিস্যুর ব্যবস্থা না করলে, সেটা অবিচার হবে! কাজেই বঙ্গবাহাদুরের লাখ টাকা থেকে তো আর টিস্যু খরিদের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না, তাই উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চলের যে সকল মানুষ বানের জলে ভাসছে তাদের জমি-জিরাত বন্দক-বিক্রি করে কিছু টাকা যদি তারা দেশবাসীর চোখাশ্রু দূরীকরণের মহৎ কাজের লক্ষ্যে টিস্যু খরিদের জন্য দিতো, তবে বড়ই উপকৃত হওয়া যেতো। জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে তাদের অবদানকে সারাজীবন মাথায় বয়ে বেড়াত!

আমরা বঙ্গবাহাদুরের জন্য এত কিছু করলাম আর বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ আমাদের চোখের পানির চিহ্ন দূর করার জন্য যদি কিছু না করে, তবে সেটা মারাত্মক গাদ্দারীর শামিল!

বঙ্গবাহাদুর এবং তার অনুসারীদের কোন কষ্ট থাকবে আর দেশের মানুষ পানিতে হৈ হৈ করে সাঁতার কাটবে-এটা মানবতার খেলাফ। আসুন আমরা বঙ্গবাহাদুরের রুহের মাগফেরাত কামনা করে লুঙ্গি ড্যান্সের আয়োজন করি! বানভাসি মানুষকে আরও চুবিয়ে এবং তাদেরকে আরও কয়েকদিন ভুখা রেখে আমরা বঙ্গবাহাদুরের অকাল প্রয়াণে ৫ দিনের জাতীয় শোক পালন করতে পারি!

বঙ্গবাহাদুরের অসময়ে চলে যাওয়ায় যে শূন্যস্থান হয়েছে তা আর পূরণ হবে না কোনদিন। জাতির এ অপূরণীয় ক্ষতির ক্ষত কি করে জাতি পূরণ করবে?

বঙ্গবাহাদুরের চলে যাওয়ায় জাতি শত বছর পিছিয়ে গেল! বঙ্গবাহাদুরের তিরোধানে জাতি বড় লোকসানিতে নিপতিত হলো এবং বঙ্গবাহাদুরের অভাব তারা ক্ষণে ক্ষণে উপলব্ধি করতে পারবে বলে বিশ্বাস!

জয়তু বঙ্গবাহাদুর!

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.