Sylhet Today 24 PRINT

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলকের পেছনে আবর্জনার ভাগাড়, সামনে গরু ছাগলের হাট

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক |  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

সিলেট নগরীর টিলাগড়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলককে যত্ন করে সংরক্ষণ না করে এর চারপাশে ময়লা, আবর্জনা, গরু ছাগলের হাট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লেখক হাসান মোরশেদ।

সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধের উপর হাসান মোরশেদের প্রকাশিত 'দাস পার্টির খোঁজে' বইতে ১৯৭১ সালে টিলাগড়ের এই স্থানে পাকিস্তানি বাহিনীর বিপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন মোত্তালেবের একটি ঐতিহাসিক যুদ্ধের উল্লেখ রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই এলাকার একটি ছবিসহ পোস্ট করে মোরশেদ আক্ষেপ করে লিখেছেন, "সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পয়েন্ট। ২৫ মার্চ রাতে আগরতলা মামলার আসামী ক্যাপ্টেন(অব:) মুত্তালিব এখানে এসে দাঁড়িয়েছিলেন পিস্তল হাতে। বেসামরিক যোদ্ধা, গন-যোদ্ধাদের কোন স্মৃতিচিহ্ন থাকতে নেই। দায়সারাভাবে নামতালিকার একটা ফলক থাকলেও তার সামনে থাকবে গরুছাগলের হাট, পেছনের ময়লার ভাগাড়।"


তিনি লিখেছেন:

সুপ্রভাত বাংলাদেশ।
বিশাল গরু ছাগলের হাট অথবা গরু ছাগলের বিশাল হাট। এর পেছনে লাল চিহ্নিত ফলকটি সিলেট জেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা। গরু ছাগলের হাটটি ফলকের চত্বর। এই মৌসুমী হাট বসা ছাড়াও শীতকাল ব্যাপী এই চত্বর দখল থাকে ওয়াজ মাহফিল, ব্যাডমিন্টন ও ফুটসাল টুর্নামেন্ট এ। বড় বড় নেতাদের তার থেকে ও বড় বড় ব্যানার ফেস্টুন ঝুলে থাকে ফলকের গায়ে।

আরো মজার বিষয় হলো- ফলকের ঠিক পেছনের স্থাপনাটি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ময়লা আবর্জনা প্রক্রিয়াজাতকরণ এর জন্য।

যেখানে দাঁড়িয়ে ছবিটি তুলেছি- সিলেট অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা পয়েন্ট। ২৫ মার্চ রাতে আগরতলা মামলার আসামী ক্যাপ্টেন(অব:) মুত্তালিব এখানে এসে দাঁড়িয়েছিলেন পিস্তল হাতে। অপরদিক থেকে ছুটে আসা জীপে গুলী করে হত্যা করেছিলেন পাকিস্তানী আর্মি অফিসারকে। সেই শুরু প্রতিরোধ যুদ্ধের।
কিছুদিন আগে এই চত্বরে একটা সাইনবোর্ড দেখেছিলাম-ক্যাপ্টেন মুত্তালিব চত্বর । সেটা নাই। তার বদলে বেয়নেট এর ডিজাইন এ রঙচঙহীন কি একটা বানিয়ে রাখা আছে- সম্ভবত: সেনাবাহিনীর কাজ। তাদের একটা সাইনবোর্ড ও দিক নির্দেশিকা। এখান থেকে দুই কিমি দূরে খামারের কাছে বেঙ্গল রেজিমেন্টের কয়েকজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর খুব সুন্দর ভাবে সংরক্ষণ করেছেন তারা।

কালেঙ্গার জঙ্গলে দেখেছিলাম ইপিআর ( বর্তমান বিজিবি) এর নায়েক শহীদ আব্দুল মান্নান বীর উত্তম এর কবরটি বেশ যত্ন করে সংরক্ষিত।

সবই ঠিকাছে। শুধু বেসামরিক যোদ্ধা, গন-যোদ্ধাদের কোন স্মৃতিচিহ্ন থাকতে নেই। দায়সারাভাবে নামতালিকার একটা ফলক থাকলেও তার সামনে থাকবে গরুছাগলের হাট, পেছনের ময়লার ভাগাড়।

এই আর কি!

জানা গেছে সরকারদলের সাথে সংশ্লিষ্টরা পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই এলাকার পশুর হাটটি পরিচালনা করছেন । এছাড়া স্থানীয় কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ স্মৃতিফলকের সামনের অংশে নানা সময়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন। শীত মৌসুমে একই স্থানে ওয়াজ মাহফিলও করা হয়।

 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.