Sylhet Today 24 PRINT

বর্মী থান্টের নেতৃত্বে গণহত্যাপন্থী প্রস্তাব জাতিসংঘে পাশ হয়েছিল

শামস রাশীদ জয় |  ২০ নভেম্বর, ২০১৬

এই বার্মা থেকে এক সময় ‘স্বচ্ছ’ ও ‘নিরপেক্ষ’ মহাসচিবও বানিয়েছিল জাতিসংঘ / আমেরিকা / আন্তর্জাতিক ‘সুশীলরা’। তখনও রোহিঙ্গারা বেনাগরিক ছিলো।

৩১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে উ থান্ট এর দশ বছরের মেয়াদ শেষ হয়। অং সাং সুচির আগে বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত বর্মী ছিল উ থান্ট। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে একের পর এক পাকিস্তানপন্থী ও গণহত্যাপন্থী প্রস্তাব জাতিসংঘে পাশ হয় এই বর্মীর নেতৃত্বেই।

ক্ষত অনেক পুরনো!

আন্তর্জাতিক আইনে স্বাধীনতা দাবীর সকল শর্ত বিদ্যমান থাকলেও আরাকানের জন্য জাতিসংঘ কিছুই করে না। বাংলাদেশকে সীমান্ত খুলে দিতে বলে, থাইল্যান্ড আর মালয়েশিয়াকে ট্রলারভর্তি রিফিউজি নিতে বলে - যাতে করে বার্মিজরা আরও বেশী করে জাতিগত নির্মম নির্যাতন করতে পারে আরাকানিদের উপর। এক সময় বার্মিজরা আরাকানের সকল অবার্মিজ অধিবাসীদের উপরই নির্যাতন করতো। সুবিধা না করতে পেরে ধর্মকার্ড খেলা শুরু করে পরে। বেছে বেছে মুসলিম আরাকানিদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে, যেন এটাকে বার্মিজদের অবার্মিজের উপর অত্যাচার না মনে হয়। আপাতত রেহাই দিয়েছে সেখানকার চাকমা আর রাখাইনদের।

একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে জামায়াত-শিবির চক্র বার্মিজদের প্রোপাগান্ডাকে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়ার চেষ্টা করছে এই বলে, 'হ্যাঁ, রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে ওরা মুসলমান বলেই'। অথচ খোদ রেঙ্গুনের বার্মিজ মুসলিমরা শান্তিতে আছে।

জামায়াত-শিবির শয়তান-শাবকদের সাথে বার্মিজ শাসক মহলের সম্পর্ক ও ঐক্য অনেক পুরনো। ৬৫ সালের যুদ্ধের পর 'তোফা' হিসেবে নাফ নদীর অপর পারের শতাধিক বর্গকিলোমিটার জায়গা আইউব খান বার্মাকে দিয়ে দেয়ায় এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে বার্মিজদের জাতিসংঘে ও সীমান্তে দেয়া অসামান্য সব সহায়তা সেই অন্ধকার সম্পর্ককে কেবল গভীর থেকে গভীরতরই করেছে। জ্বালানী ও রসদ আনা, শীর্ষ রাজাকারদের পালানো, ব্যাংকের স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ পাকিস্তানীদের চুরি করে নিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি - এসবের অংশীদার ও রুট ছিল বার্মা।

মুসলিম / রোহিঙ্গা খতমের পর বার্মিজরা আবার চাকমা, রাখাইন, ও অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর উপর হামলা শুরু করবে। বার্মাকে সে দেশের ৫০% জনগোষ্ঠীর বার্মিজরা বাকি সবাইকে খেদিয়ে বিদায় করে সে দেশে কেবল বার্মিজদের জাতিগত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন অনেক পুরনো।

বাকি বার্মার কি হবে পরের কথা। আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক দুটি বিষয়ের অনেক দেরী হয়ে গেছে। এখনই দুটি কাজ করা হোক:

১. জেনারেল আইউবের অবৈধভাবে দেয়া জমি বাংলাদেশকে ফেরত দেয়ার দাবী করা হোক। প্রাথমিকভাবে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে, কাজ না হলে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ফোরামে।

২. আরাকানের স্বাধীনতা বা আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষার জন্য সেখানে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব করা হোক যৌথভাবে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ও মালয়েশিয়া দ্বারা। প্রাথমিকভাবে আঞ্চলিক ফোরামে ও পরবর্তীতে সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে।
[ফেসবুক থেকে]

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.