সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | ২৫ নভেম্বর, ২০১৬
গত মঙ্গলবার রাজধানীতে যাত্রা শুরুর ঘোষণা দেয় স্মার্টফোনে ট্যাক্সিসেবা সার্ভিস ‘উবার’। তবে শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘উবার’ কে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।
বিআরটিএ-এর এমন বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করেছেন লেখক আরিফ জেবতিক। এ প্রসঙ্গে ফেসবুকে তিনি লিখেন-
বিআরটিএর কর্মতৎপরতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। এরা 'উবার' চালু হওয়ার সাথে সাথে পড়িমড়ি করে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছে যে 'উবার' বাংলাদেশের 'ট্যাক্সিক্যাব সার্ভিস গাইডলাইন -২০১০' অনুসরন করছে না তাই উবার বেআইনি সার্ভিস, বাংলাদেশে উবার চালানো যাবে না।
বিষয়টি দেখে আমার সেই পাগলের কথা মনে পড়ল, যে একটা হাতে কাগজ নিয়ে ঘুরে বেড়াত আর চিল্লাতো, বউ নাই তো কী হয়েছে, এই যে হাতে কাবিন আছে।বিআরটিএ ঢাকা শহরে ট্যাক্সিক্যাবের সিন্ডিকেট চালু করেছে, সরকারি বড় পাণ্ডাদের সংশ্লিষ্ট কোম্পানি আর সেনাবাহিনীর এক কোম্পানি-এই দুটোকে তারা ট্যাক্সিক্যাবের পুরো ব্যাবসা দিয়ে বসে আছে, এই দুইদলেরই পরিবহন সেক্টরে নূন্যতম কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এরা প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্যাক্সি নামাতে পারেনি, আমি গত দুই মাসে আমার চলাচলের পথে একটাও হলুদ ট্যাক্সি দেখিনি- সুতরাং এর অপর্যাপ্ততা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। বিআরটিএ এখন সেই ট্যাক্সি সার্ভিসের দোহাই দিয়ে এই দেশে উবার চালু হতে দেবে না।
উবার যে খুব আহামরি কিছু, তা নয়। কিন্তু আমাদের মতো দেশে যেখানে গণপরিবহনের অনেক সংকট, এবং এমপি না হলে যেখানে গাড়ি ও বাইকের দামের চাইতে তাদের ট্যাক্স বেশি দিয়ে সেগুলোকে মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে চাইলেই একটা ডিসেন্ট গাড়ি ডেকে এখানে ওখানে যাওয়ার সুবিধাটুকুর ব্যাপক চাহিদা আছে।
উবার সেই মার্কেট গ্যাপে ঢুকে পড়লে সাধারন জনগনের জীবনযাত্রা সহজ হয়।
এই দেশে গণপরিবহন একপাল গুন্ডা বদমাশের হাতে। এরা সিন্ডিকেট করে সবগুলো সিএনজি অটোরিক্সার লাইসেন্স তাদের হাতে নিয়ে রেখেছে, এরা বাস পরিবহনের সব সিন্ডিকেট বানিয়ে যথেচ্ছা বাস চালায়- গরুছাগল চিনতে পারলে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়, সবই তাদের ইচ্ছাধীন।
জীবনেও ড্রাইভিং সিটে না বসে এই দেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে পারা পানিভাতের মতো সহজ ব্যাপার।
এরকম দেশে উবার চালু হওয়ার সপ্তাহ যেতে না যেতে বিআরটিএ কেন বিজ্ঞপ্তি দিতে লাফিয়ে পড়ে, সেটা বুঝতে হলে বড় বিশারদ হতে হয় না।
'উবার' সমর্থন করি, গণপরিহনের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হওয়া প্রতিটি ছোটবড় উদ্যোগকে সমর্থন করি।
বিআরটিএ-তুমি কেন ঘষো, তা আমি জানি।