Sylhet Today 24 PRINT

আমি বংশ পরম্পরার মুক্তবুদ্ধিচর্চার লোক : শামসুজ্জামান খান

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক |  ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

শ্রাবণ প্রকাশনীকে দুই বছর বইমেলায় নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে চলমান সমালোচনার প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে নিজের বক্তব্য দিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। নিজেকে মুক্তবুদ্ধিচর্চার লোক দাবি করে শামসুজ্জামান খান লিখেন, সত্য হল অমি বংশ পরম্পরার মুক্তবুদ্ধিচর্চার লোক। সে ঐতিহাসিক দলিলপত্র আমার অফিসে এলে দেখাতে পারি। প্রপিতামহ, পিতামহ পিতা সবাই মুক্তবুদ্ধির অনুসারী ছিলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক লিখেন-
"আত্মপ্রচার করতে চাইনি, কিন্তু যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে তাতে কিছু কথা বলা জরুরী হয়ে পড়েছে। তা না হলে ভুল বার্তা চলে যাচ্ছে তরুণদের কাছে।

এখনকার তরুণরা এসব ইতিহাস জানেনা। তরুণ সাংবাদিকরাও তাই। তাই তারা চতুর ফন্দিবাজ ও যেকোনও ভাবে সংবাদপত্রের পাতায় থাকার কৌশল করছে, এবং প্রতি বছরই এই নাটক করে এমন এক প্রকাশক নামধারীর পাল্লায় পড়েছে। সে নাকি মুক্তবুদ্ধির পক্ষের লোক। যে বইকে সে মুক্তবুদ্ধির বই বলে গত বছর রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রচার করে সে বইটি আসলে মুক্তবুদ্ধিচর্চা ধ্বংস করার বই। এ বইয়ের বিরোধিতা করে আমি নাকি মুক্তবুদ্ধিচর্চার ওপর আঘাত হানছি। এত বড় মিথ্যাচার আর হয়না।

সত্য হলো আমি বংশ পরম্পরার মুক্তবুদ্ধিচর্চার লোক। সে ঐতিহাসিক দলিলপত্র আমার অফিসে এলে দেখাতে পারি। প্রপিতামহ, পিতামহ, পিতা সবাই মুক্তবুদ্ধির অনুসারী ছিলেন।

যাহোক, সে ইতিহাস বিস্তারে লিখবো পরে। এখন বর্তমানে ফিরি। ১৯৭৫ সালের পর লেখক- সংস্কৃতি কর্মীদের মধ্যে আমিই প্রথম মুক্তবুদ্ধির চর্চার জন্য স্বৈর সামরিক শাসন আমলে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী NSI কর্তৃক ধৃত হই। আমার দোষ ছিল বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের একুশের আলোচনায় বিষয় দিয়েছিলাম : মুসলিম সাহিত্য সমাজ ও শিখা আন্দোলন (১৯২৬)।

স্মর্তব্য যে এরাই বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম প্রগতিশীল; এদের শ্লোগান ছিল : বুদ্ধির মুক্তি, 'Emancipation of Intellect'. এদের নেতা কাজী আব্দুল ওদুদকে ঢাকা ছেড়ে কলকাতায় চলে যেতে বাধ্য করা হয়। আমাকে পূর্বোক্ত গোয়েন্দা সংস্থাও দিনভর মানসিক নির্যাতনের পর চট্টগ্রাম বদলি করা হয়। আমাকে এই বিপদে ফেলার মূলে ছিলেন জিয়ার মন্ত্রী আকবর কবীর (খুশি কবীরের পিতা; তাই গতকাল ওদের সঙ্গে তার যোগদান খুব তাৎপর্যপূর্ণ) খোন্দকার আব্দুল হামিদ, মনিরউদ্দিন ইউসুফ ও বাংলা একাডেমির তৎকালীন ডিজি আশরাফ সিদ্দিকী।

হায়! এখন মুক্তবুদ্ধিচর্চার নতুন ধান্দাবাজদের এই কুম্ভীরাশ্রু দেখে মনে হয় ধরণী দ্বিধা হও।"

উল্লেখ্য, গত সোমবার বইমেলায় মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদন ফরম তুলতে গেলে শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসানকে নিষিদ্ধের বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন রবিন। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেন বইপ্রেমিরা। শ্রাবণ প্রকাশনী নিষিদ্ধের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গণমাধ্যমকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জানিয়েছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র- টিএসসিতে প্রকাশক শামসুদ্দোহা মানিককে গ্রেপ্তার করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় রবিন আহসানের শ্রাবণ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

গত বছর অমর একুশে বইমেলায় হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে বিদ্রুপ করে লেখা একটি বই ছাপানোর অভিযোগে ব-দ্বীপ প্রকাশনীকে নিষিদ্ধ করে বাংলা একাডেমি। পরে তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭-এর ২ ধারায় শাহবাগ থানা পুলিশের দায়ের করা মামলায় ব-দ্বীপের প্রকাশক শামসুদ্দোহা মানিক গ্রেপ্তার হন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.