Sylhet Today 24 PRINT

দুর্নীতির অভিযোগকারীদের এবার ক্ষমা চাওয়া উচিত: জয়

স্যোশাল মিডিয়া ডেস্ক  |  ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব‌্যাংকের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের যেসব ব্যক্তিরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন তাদের একহাত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়।

এই প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কানাডার আদালতেও নাকচ হয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীপুত্র ফেসবুকে দেশের 'সুশীল সমাজের একটি অংশের' প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশ্বব্যাংকের সাথে সুর মিলিয়ে দুর্নীতির অভিযোগকারীদের এখন সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছিল।

তবে প্রকল্পে কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের একটি ষড়যন্ত্রের তথ‌্য মেলার কথা জানিয়ে মামলা করেছিল দুদক।

তার পাঁচ বছর পর শুক্রবার কানাডার আদালতের দেওয়া রায়ে বাংলাদেশের এই প্রকল্পে তার দেশের কোম্পানির বিরুদ্ধে বিশ্ব ব‌্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানায়।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয় লিখেছেন, “এই মিথ্যা তৈরি করেছে বিশ্ব ব্যাংক। পুরো উপাখ্যান চলাকালে আমি তাদের এই সব প্রমাণাদি দেখেছি। এতে সুনির্দিষ্ট-বিস্তারিত কিছু নেই, যা সুস্পষ্টভাবেই বানানো।

“রয়েছে কেবল একটি বেনামী সূত্র, যা এমনকি কানাডার আদালতের কাছেও প্রকাশ করা হয়নি। সুতরাং তারা অভিযোগ দায়ের করেছে, কিন্তু দাবির পক্ষে প্রমাণ দিতে অস্বীকার করেছে।”

“আমার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সুনামহানি করতে বিশ্ব ব্যাংক এই ষড়যন্ত্র করেছে,” বলেন জয়।

শেখ হাসিনা বরাবরই বলে আসছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব‌্যাংকের অভিযোগ তোলা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ এবং এতে বাংলাদেশিরাও জড়িত ছিলেন।

তিনি সম্প্রতি সংসদে বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব‌্যাংকের অর্থায়ন আটকেছিলেন নোবেলজয়ী বাংলাদেশি মুহাম্মদ ইউনূস এবং এতে বাংলাদেশের এক সম্পাদকেরও ভূমিকা ছিল।

বিশ্ব ব‌্যাংক বলার পর পদ্মা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে শোরগোল ওঠে বাংলাদেশেও; তখন সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন অনেকে।

তাদের উদ্দেশে জয় লিখেছেন, “এটা লজ্জাজনক যে, আমাদের সুশীল সমাজের একটা অংশ দ্রুত আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে ও বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বেশ কয়েকজন পরিশ্রমী, সম্মানিত যোগ্য মানুষের গায়ে কালিমা লেপন করেছেন…যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সরকার এবং ‘সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়া’ ব‌্যক্তিদের কাছে ওই সমালোচকদের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ এখন পাওনা বলে মন্তব‌্য করেছেন জয়।

“বাংলাদেশের কাছেও তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ,” বলেছেন তিনি।

পদ্মা নদীর উপর ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্ব ব‌্যাংক প্রথমে অর্থায় স্থগিত করে। এরপর ফিরে এলেও দুর্নীতির তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তারা। এনিয়ে মনকষাকষির এক পর্যায়ে তাদের বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।

মায়ের মতো জয়ও বলেন, ইউনয়সের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সরকারকে শায়েস্তা করতে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করতে বিশ্ব ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জয় জানান, বাংলাদেশ সরকারকে হিলারির হুমকি সম্বলিত বার্তা পৌঁছে দিতে তার সঙ্গেও তখন কয়েকবার যোগাযোগ করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা।

ইউনূস বরাবরই তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ প্রত‌্যাখ‌্যান করে আসছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব‌্যের পরও ইউনূস সেন্টার থেকে তার প্রতিবাদ জানানো হয়।

ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও কর ফাঁকির অভিযোগও আনেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয়।

তিনি বলেন, “আপনারা কি জানেন, ইউনুস, তার পরিবার, বন্ধুরা বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে লাভজনক টেলিযোগাযোগ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক। একটি বেসরকারি ট্রাস্ট্রের মাধ্যমে তার এটার মালিক হয়েছে, কেবল তারাই এর সুবিধাভোগী।

“গ্রামীণ ব্যাংকের একটি মাল্টি মিলিয়ন ডলারের লোন থেকে এই শেয়ারের টাকা দেওয়া হয়েছে, যা অবৈধ। দাতাদের অর্থে দরিদ্রদের ক্ষুদ্র ঋণ দিতে খরচ করে গ্রামীণ ব্যাংক। এখান থেকে ব্যক্তিগত ব্যবসার জন্য ঋণ করা যায় না।”

“গ্রামীণ ব্যাংকে করা একটি স্বাধীন কমিশনের অডিটে দেখা গেছে, এই ট্রাস্ট থেকে লাভের এক পাইও গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা তার অন্য কোনো প্রকল্প পায়নি,” বলেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.