মাসকাওয়াথ আহসান

২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ১৬:১৬

ফেসবুকের টাইমলাইন জীবন বৃত্তান্তের মতো

বয়স যাদের ত্রিশের নীচে; তারা সম্ভাবনাময় প্রজন্ম। সুতরাং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের খুবই সচেতন থাকা ও নৈতিকতা প্রদর্শন জরুরী।

ফেসবুকের টাইমলাইন হচ্ছে জীবন বৃত্তান্তের মতো। এখানে একজন মানুষ যা লেখে; তা থেকে তার মনের ও চিন্তার এক্সরে রিপোর্ট পাওয়া যায়।

সুতরাং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সময় কোন ব্যক্তি-গোষ্ঠী-ধর্ম-দল-লিঙ্গ-বর্ণ নির্বিশেষে কারো প্রতি বিদ্বেষ বা ঘৃণা প্রকাশ অনৈতিক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেহেতু পাবলিক স্পেস; এখানে কথা বলার সময় অশোভন বা অশালীন শব্দ-বাক্য ব্যবহার নিম্ন ও গর্হিত রুচির পরিচয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন রকম গুজব বা ফেইক নিউজ ছড়ানো বা শেয়ার করা; অত্যন্ত নেতিবাচক মানসিকতার পরিচায়ক। গুজব ও ফেইক নিউজ সামাজিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। তাই কেবলমাত্র আস্থা অর্জনকারী সংবাদ মাধ্যমের খবর শেয়ার করা বাঞ্ছনীয়।

আর নিজে থেকে কোন খবর দিতে চাইলে; খবর সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে প্রচার করা অনুচিত। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অভিমত প্রকাশের যে উন্মুক্ত মাধ্যম উপহার দিয়েছে; তার সুব্যবহার করা কাঙ্ক্ষিত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ নিজেই সাংবাদিক ও সম্পাদক। সুতরাং অধিকতর দায়িত্ববোধের পরিচয় প্রত্যাশিত একজন আধুনিক নাগরিকের কাছ থেকে।

লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন; দেশে-বিদেশে যে কোন চাকরিদাতা সংস্থা প্রার্থীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডির খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করে। এমনকি পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও বৃত্তির জন্য আবেদন করলে তারাও ফেসবুক টাইম-লাইন দেখে প্রার্থীর আচরণগত সংস্কৃতি পর্যবেক্ষণ করে। অধুনা নিরাপত্তাজনিত কারণে কোন দেশের ভিসার জন্য আবেদন করলেও তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেদনকারীর কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে।

কাজেই তিরিশের ওপরের কিছু লোক যেরকম কুরুচিপূর্ণ কার্যকলাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রদর্শন করে; তা থেকে তিরিশের নীচের তরুণদের শেখার কিছুই নেই। এসব লোক অসভ্য বাতাবরণে অনেক রুচিহীন, ঘৃণাজীবী, পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট কথা-বার্তা বলেও সমাজে মোটামুটি দাপটে চলাফেরা করে আসছে। কিন্তু সেই অসভ্য সমাজ বা পৃথিবী আজকের বাস্তবতা নয়।

তাই তরুণদের তাদের নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য নীতি নৈতিকতা বজায় রেখে সভ্য মানুষের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয়তা প্রত্যাশিত।

  • মাসকাওয়াথ আহসান: লেখক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত