Sylhet Today 24 PRINT

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার মৌসুম এখন

আল আমিন রহমান |  ১৪ মে, ২০১৮

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার জমজমাট মৌসুম চলছে। বাংলাদেশের ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে আমিও যে নিউজের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠব ভাবিনি, পুলকিত বোধ করছি। যিনি কষ্ট করে, শ্রম দিয়ে বিশেষ নিউজটি করেছেন তিনি নির্বোধ নন, চরম বৈষয়িক বোধ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ বলেই বিশ্বাস করি। তার এতো কষ্ট ও শ্রমের জন্য মায়া হচ্ছে, করুণাও হচ্ছে।

তিনি হয়ত জানেন না ব্যক্তিগত আক্রোশ, বানোয়াট, ভিত্তিহীন বা সৃজনশীল মিথ্যাচারে পূর্ণ (a story full of creative lie), ভাড়াখাটা বুদ্ধি দিয়ে তৈরি, ভিত্তিহীন কোন নিউজ দিয়ে মহল বিশেষের ‘পারপাস সার্ভ’ করা যায়, হলুদ সাংবাদিকতা করা যায়; কারোর চরিত্রে কালিমা লেপন করা যায় না। তাছাড়া, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সদ্য অনুষ্ঠিত ২৯তম জাতীয় সম্মেলনে কোন আলোচিত প্রার্থীও ছিলাম না। এই মেধা ও শ্রম কোন আলোচিত বা সম্ভাব্য কোন হট ক্যান্ডিডেটের পেছনে ব্যয় করলে বৈষয়িক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিবেদকের অনেক বেশি লাভবান হবার সম্ভাবনা ছিল।

সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল আন্দোলনের পর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন ও আবেগকে কাজে লাগিয়ে কারা রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লুটতে মরিয়া তারেক ও বিএনপিঘেঁষা শিক্ষকের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তা আজ জাতি জানে। কারা সেসময় রাতের অন্ধকারে আমার হলের এক ছাত্রের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন জমিয়ে তোলার অপচেষ্টা করেছিলেন তাও আজ প্রযুক্তির কল্যাণে সাধারণ মানুষজন জেনেছে। সেসময় আমাদের নেতা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুযোগ্য সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ভাইয়ের প্রত্যুৎপন্নমতিতায় মৃত্যুর গুজব ছড়ানো ছাত্রকে লাইভ হাজির করে ষড়যন্ত্রকারীদের অভিপ্রায় সে গুজবের রাতে আমরা নস্যাৎ করেছি।

জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি চাকরিতে সকল প্রকার কোটা বাতিলের ঘোষণা দেবার পর বিশেষ কারোর জন্য আর কোটা ব্যবস্থার কোন সুযোগ নেই। মেধার ভিত্তিতে সকলের জন্য সমান প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। সে সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ না জানিয়ে যারা জাতীয় নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে সারাদেশে তরুণদের সরকার বিরোধী আন্দোলনে উসকে দিচ্ছে আমরা সেই সুযোগ সন্ধানীদের পরিচয় জানি।

ছাত্রদল-জামাত-শিবিরের গুপ্তঘাতকদের ফেক আইডিতে ভর্তি ফেসবুকে একটা পেইজের মাধ্যমে তারা সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রচার, প্রচারণা ও উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। অনেকের চরিত্র হনন করছে। যার সর্বশেষ শিকার এদেশের জনপ্রিয় শিক্ষাবিদ, শিশুসাহিত্যিক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে নোংরা, জঘন্য ভাষার ব্যবহার ও জীবননাশের হুমকির মত লেখা ও মন্তব্য ওই গ্রুপে কারা নিয়মিত করেছে আমরা দেখেছি । জাফর ইকবালের অপরাধ তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের পড়া তাঁর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা ‘ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’- এদেশের ঘরে ঘরে কিশোর-কিশোরীদের কাছে পঠিত জনপ্রিয় বই। আমাদের মত একটা প্রজন্ম তাকে ভীষণ ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। তাই তাঁর জীবননাশের প্রচেষ্টার পরও তাঁর বিরুদ্ধে ওই গ্রুপে জামাত-শিবিরের প্রকাশ্যে নানা উসকানি আমাদের হতবাক করেছে বৈকি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সন্তান, দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবালের পাশে অতীতের ন্যায় এখনও আছে, সবসময় থাকবে।

আর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে নতুন করে ছাত্রলীগ করি না। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও যৌবনে শুদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার পরিচয় পারিবারিক সূত্রে। সুদিনে নয়, দুর্দিনে আওয়ামী লীগের জন্য খাটা আমার পরিবার। ছাত্রলীগে আমার আনুষ্ঠানিক যাত্রা সিলেট সরকারি কলেজ থেকে। তাই মহল বিশেষের উৎসাহে বানোয়াট কিছু দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন সুযোগ নাই ।

ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নিয়মিত কিছু নিউজ না করলে অনেক গণমাধ্যম অচল হয়ে পড়ে। গর্তে লুকিয়ে পড়া কোণঠাসা হেজাবিদের কাছে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও জঘন্য কুৎসা তাই ওইসব মিডিয়ার বদৌলতে জনপ্রিয় ওঠে। তাও যদি হয় রাজনৈতিক দেউলিয়া সংগঠন বিএনপির জমানার দুর্বৃত্তায়নের অন্যতম খলনায়ক, খালেদা-তারেকের সহচর কোন মালিকের গণমাধ্যমের কুৎসা, সঙ্গে হলুদ সাংবাদিকের ব্যক্তিগত আক্রোশ যোগ হয় তাহলে আমার বলার কিছু নেই।

এরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে তাদের এই কুৎসা সংগ্রামের অপচেষ্টা সবসময় চালিয়ে যাবে। তাই অবাক হবার কিছু নেই। কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারী যার উপর আমার হলে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সে তৎক্ষণাৎ তা আমার কাছে অস্বীকার করেছে। সে কথোপকথনের রেকর্ডও আমার কাছে আছে। পরে যদি সে তার অবস্থান বদলায় বুঝতে হবে দুরভিসন্ধি আছে।

ছাত্রলীগের কোন নেতা পরিচয়ে নয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে সবসময় ভার্চুয়ালি নয়, সাহসী রাজপথে আপসহীন ছিলাম, থাকব। পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, এ আমার অহংকার, এ আমার রক্তে খেলা করা অঙ্গীকার।

এদেশের দুখী মানুষের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে নির্ঘুম থাকা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ও স্বপ্নকে নস্যাৎ করে দিতে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বা মুখোশের অন্তরালে অপতৎপরতা চালাবে, যে কোন প্রকারের অপতৎপরতাকে প্রশ্রয় দিবে-তাদের শক্ত হাতে অতীতের ন্যায় মোকাবেলা করা হবে। কোন অপবাদ দিয়ে কাউকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপি-ছাত্রদল, জামাত-শিবির আর নব্য সব রাজাকারদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে, মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নের প্রশ্নে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বরাবরের মতোই রাজপথে আপসহীন থাকবে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

  • আল আমিন রহমান: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু হল শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.