Sylhet Today 24 PRINT

ভারতে হিন্দি ‘চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার’ প্রতিবাদ কবীর সুমনের

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

কবীর সুমন ও অমিত শাহ

বহু ভাষাভাষীর দেশ ভারতে হিন্দিকে সর্বজনীন ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সরকারি পদক্ষেপের আলোচনার সময়ে এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কবীর সুমন। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি হিন্দিকে সর্বজনীন ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার আবেদন জানিয়েছেন। মন্ত্রীর এই বক্তব্যে সারাভারতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে কবীর সুমন হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার এই প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি লালন, তিতুমির, নজরুলের কবিতা আর একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা দিয়ে প্রতিরোধের আহ্বান জানান।

কবীর সুমন লিখেন,

"প্রতিরোধ করো লালনের নাম নিয়ে।
প্রতিরোধ করো তিতুমির তিতুমির।
প্রতিরোধ করো ভাষার অস্ত্র দিয়ে।
‘বল বীর বল উন্নত মম শির’।
প্রতিরোধ করো নজরুল শতবর্ষে।
প্রতিরোধ করো একুশে ফেব্রুয়ারি।
ভাষার পীড়ন ঘোচাও ভারতবর্ষে।
ঘোচাও হিন্দি চাপানোর গা-জোয়ারি।"

এরআগে ১৫ সেপ্টেম্বর কবীর সুমন ফেসবুকে আরও লিখেন,

"বাংলা ভাষাকে বলছে আঞ্চলিক
হিন্দি রাষ্ট্র মতবাদ গড়ে তুলে,
দরকার হলে আমি খুব প্রাদেশিক
রাষ্ট্র মানিনা নিজের ভাষাকে ভুলে"

উল্লেখ্য, গত শনিবার হিন্দি দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ভাষণ দিতে গিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবেদন জানিয়েছেন, যাতে হিন্দিকে ভারতের “সর্বজনীন” ভাষা করে দেওয়া হয়। একটি টুইটার পোস্টের মাধ্যমে অমিত শাহ বলেন, দেশে এমন একটি সর্বজনীন ভাষার প্রয়োজন যা “আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের পরিচিতির ছাপ” রেখে যায়। তিনি আরও বলেন, হিন্দির ক্ষমতা আছে “দেশকে এক সূত্রে ঐক্যবদ্ধ” করার।

“ভারত নানা ভাষার দেশ, এবং প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তরে এমন একটি সর্বজনীন ভাষার প্রয়োজন যা ভারতের পরিচিতি হয়ে উঠবে। আজ যদি এমন একটিও ভাষা থেকে থাকে, যা এক সূত্রে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে, তা হলো হিন্দি, যা কিনা ভারতে সবচেয়ে বেশি বলা এবং বোঝা হয়,” তাঁর টুইটে লেখেন শাহ।

সারা ভারতে “ওয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ” বা একটিই ভাষার পক্ষে বলতে গিয়ে অমিত শাহ আরও লিখেছেন, “আজ হিন্দি দিবস উপলক্ষে আমি দেশের সব নাগরিককে বলতে চাই যে আমাদের মাতৃভাষার ব্যবহার আমাদের সকলের বাড়ানো উচিত, পাশাপাশি ব্যবহার করা উচিত হিন্দি, যাতে আমরা বাপু (মহাত্মা গান্ধী) এবং লৌহপুরুষ সর্দার প্যাটেলের সারা দেশে একটিই ভাষা ব্যবহারের স্বপ্ন সফল করতে পারি।”

তার এই টুইটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে টুইটারে ট্রেন্ড করছে #StopHindiImposition হ্যাশট্যাগ দিয়ে অসংখ্য টুইট, যেখানে ব্যবহারকারীরা হিন্দিকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ওড়িশার বিজু জনতা দলের প্রাক্তন সাংসদ তথাগত সতপথি, যিনি দীর্ঘদিন ধরেই সারা দেশের ওপর ‘হিন্দি আরোপ’ করার বিরোধিতা করে এসেছেন।

সতপথির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা, যেমন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী, তামিল নাড়ুর ডিএমকে প্রধান এম কে স্টালিন, এবং এআইএমআইএম প্রধান তথা লোকসভা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। নিজেদের মাতৃভাষায় টুইট করে কুমারস্বামী এবং স্টালিন জানিয়েছেন, দেশের ওপর জোর করে হিন্দি চাপালে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হবে। এছাড়াও বহু সংখ্যক নেটিজেন জানিয়েছেন যে ভারতে একাধিক সরকারি ভাষা রয়েছে। হিন্দি স্রেফ সেগুলির মধ্যে একটি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.