Sylhet Today 24 PRINT

খুনিদের কি মায়ের কথা মনে পড়েনি

মেহের আফরোজ শাওন |  ০৯ অক্টোবর, ২০১৯

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে। নির্মম এই হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বইছে প্রতিবাদের ঝড়। শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও এ মাধ্যমে সরব হয়েছেন। জনপ্রিয় অভিনেত্রী, নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন আবরারকে নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

‘‘বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের ’৬৯ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন আমার বাবা। সারাজীবন তার মুখে গর্বের সাথে উচ্চারিত হওয়া এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হবার স্বপ্ন ছিল আমারও। ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম তোলার সময় ঢাকার বাইরে থাকায় পরীক্ষা-ই দিতে পারিনি! সেই দুঃখ ভোলার জন্য প্রায়ই ভেবেছি পুত্রদ্বয়ের যেকোনো একজন যেন এই মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হতে পারে।

এই প্রতিষ্ঠানের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগেরই ছাত্র ছিল আবরার। আবরার এর কথা ভাবি আর আমার পুত্রদ্বয়ের মুখের দিকে তাকাই। আমার বুক কাঁপে। বাচ্চা দু’টোর পিঠ হাত-পা’র ওপর হাত বুলিয়ে দেই। ছোটবেলায় এ রকম ছোট ছোট হাত পা-ই তো ছিল আবরারের! তার মা কত রাত পিঠে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে তাকে! একেকটা আঘাতে ছেলেটা কি ‘মা গো’ বলে চিৎকার দিয়েছিল? ‘মা গো’ ডাক শুনে খুনি ছেলেগুলোর কি একটুও নিজের মায়ের কথা মনে পড়েনি! ঠিক কতবার…। কতক্ষণ ধরে…। কতটুকু আঘাত করলে ২০/২১ বছরের একটা তরুণ ছেলে মরেই যায়!

আমি আর ভাবতে পারি না।

ফেসবুকে আবরারের পিঠটার ছবি দেখলাম। কি ভয়ংকর! কি নৃশংস!! কি কষ্ট!!!

এই ছবিটা যেন তার বাবা-মায়ের চোখে না পড়ে। ভুল বলেছি। আবরারের বাবা, আবরারের মা তাদের বাবুটার ক্ষতবিক্ষত পিঠে হাত বুলিয়ে যেন অভিশাপ দেন মানুষের মতো দেখতে খুনি অমানুষগুলোকে। তাদের অভিশাপে যেন ধ্বংস হয়ে যায় এই অসুস্থ সমাজ।

নুসরাতকে ভুলে গিয়েছি, আবরারকেও ভুলে যাব। বিচার চাই বলে লাভ আছে কিনা জানি না তবু বিচার চাই।

সংশোধন: ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পিঠের ছবিটা আবরারের না। তাতে কি! আবরারের শরীরটাও তো ৬/৭ ঘণ্টার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত!’’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.