আরিফ জেবতিক | ০৭ এপ্রিল, ২০২০
দুনিয়ার কোথাও পর্যাপ্ত পিপিই নাই ভাই। এমনকি উন্নত বিশ্বেও মাথায় পলিথিনের গার্বেজ ব্যাগ লাগিয়ে পিপিই বানিয়ে চিকিৎসাকর্মীরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। অথচ তাঁরা কেউ পালিয়ে ঘরে খিল এঁটে বসে থাকে নি।
ব্রিটেন সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ আড়াই লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক চেয়েছিল, ৩ দিনের মাথায় সাড়ে ৭ লক্ষ মানুষ স্বেচ্ছায় করোনা মোকাবেলায় নাম তালিকাভুক্ত করেছে! এরা মরার ভয় পায় নি, এটাই মনুষ্যত্বের স্পিরিট। দেশে দেশে রিটায়ার্ড বুড়োবুড়ি ডাক্তার নার্স স্বেচ্ছায় নিজ পেশায় ফিরে এসেছে দায়িত্ব পালন করতে। কিউবার ডাক্তাররা সীমান্ত পেরিয়ে ইতালি গেছে সেবা করতে। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তাঁর ডাক্তারি লাইসেন্স নবায়ন করে হাসপাতালে সহায়তা করতে ফিরে গেছেন।
এগুলো মনুষ্যত্ব ভাই।
অথচ আপনারা বেসরকারি হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিয়ে, প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ করে দরজায় খিল এঁটে বসে আছেন। সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে সারাবছর আয় করে এখন সেই রোগীদেরকে ঠেলে দিচ্ছেন সরকারি হাসপাতালে সাধ্যের কয়েকশ গুণ বেশি দায়িত্ব পালন করা আপনাদের কলিগদের কাছে। সরকারি হাসপাতালে রোগী সামলাতে সারাবছরই হিমশিম খেতে হয়, এখন যদি আপনাদের সাধারণ রোগীদেরকেও ওখানে দেখতে হয়, তাহলে কী অবস্থা দাঁড়ায় ভেবে দেখেছেন!
ভাগ্যিস আপনাদের মতো মানুষ আমাদের বেশি নাই। থাকলে দেশ স্বাধীন হতো না। গ্রামের যে কৃষক জীবনে কোনদিন অস্ত্র দেখে নাই, সেও লুঙিতে কাছা মেরে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ত না। বলত, ' বুট দেও, ল্যাঙট দেও, তবেই না পাঞ্জাবি মারিতে যাইব'।
বিদ্যানন্দের বাচ্চাগুলোকে দেখেন, বিডিক্লিনের কিশোর কিশোরীদের দেখেন, রোটারেক্টর ছেলেগুলোকে দেখেন-কেউ এদের বাধ্য করে নি। অথচ দিনরাত রাস্তাঘাট, বস্তি-বাদাড় দাপিয়ে ত্রাণ দিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যাংকার, পুলিশ, সাংবাদিক, পরিচ্ছন্নকর্মী- কারা এই সংকটে কাজ ফেলে পালিয়েছে?
কিছু মানুষ জাতির ক্রান্তিলগ্নে সাড়া দিতে পারে, সবাই পারে না।
আপনারা পারছেন না। সেটা নিয়ে দুঃখ নেই।
কিন্তু দরজায় খিল এঁটে ফেসবুকের জানালা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করা আপনাদের মানায় না ভাই। লেট আস কল এ স্পেড, এ স্পেড।
জাতির ক্রান্তিলগ্নে ভীতু কাপুরুষদের মুখ থেকে ফালতু যুক্তি শুনতে ভালো লাগে না। পিরিয়ড।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত