প্রধান সম্পাদক : কবির য়াহমদ
সহকারী সম্পাদক : নন্দলাল গোপ
টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Advertise
রাজেশ পাল | ০৬ এপ্রিল, ২০২০
দেশজুড়ে আজ মৃত্যুর কালোছায়া। ইতোমধ্যে মৃত্যু ১২, শতাধিক সনাক্ত। আক্রান্ত ১৫ টি জেলা। শেষ রক্ষাটা বোধহয় আর হলোনা। আর না হলে দায়ী হবে মূলত তিনটি অংশ। বেপরোয়া রেমিটেন্স যোদ্ধারা; ধর্মান্ধ উগ্রপন্থী মোল্লারা; মুনাফার লোভে পাগল হয়ে ওঠা গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা। আর মাননীয় সরকার বাহাদুরের সবচেয়ে বড় দায় থাকবে ব্যবস্থাটা যথাসময়ে করতে না পারা।
১.
ইতালি থেকে রেমিটেন্স যোদ্ধারা যখন দলে দলে ছুটে আসা শুরু করছিলেন প্রথম দিকে তখন থেকেই বিমানবন্দর থেকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর দায়িত্বটা সেনাবাহিনীর হাতে ন্যস্ত করা উচিৎ ছিলো। পুলিশের সাথে যে বাহাদুরি দেখিয়েছিলো নিজের দেশ তুলে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়ে সেই দুঃসাহসটা করার চিন্তাও করতোনা। তখন কতিপয় তথাকথিত মানবতাদী এদের হাজী ক্যাম্পে রাখার জন্য মায়াকান্না করতে করতে বুক ভাসিয়েছিলেন। সরকারের উচিৎ ছিল এগুলোকে ধরে ধরে এখন করোনারোগীদের সেবায় নিয়োজিত করা।
২.
কী পরিমাণ মিথ্যাচার আর বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এদেশের আমীর হামজা, তারেক মনোয়ার, মুফতি ইব্রাহীমের মতো মোল্লারা দেখেছে দেশবাসী। প্রতিবাদ, সমালোচনা আর ট্রলের ঝড় বয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে এসব নিয়ে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কঠিন কোনো ব্যবস্থা। ফলে এরা গণজমায়েত করতে মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেছে সমানে, শুনিয়েছে কাল্পনিক করোনা ভাইরাসের সাথে স্বপ্নে কথা বলার কল্পকাহিনী, বলেছে করোনা শুধু কাফেরদের আক্রমণ করে, মুসলমানদের কিছুই করেনা, মাস্ক পর্যন্ত ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে প্রকাশ্যে। এদের কথায় লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়েছে বিভ্রান্ত। ফলে থোড়াই কেয়ার করেছে তারা সব সাবধানবাণী। সরকারের উচিৎ ছিলো সৌদি আরব, কুয়েত বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মতো শুরু থেকেই কঠোর হওয়া। ভারতে পুরোহিত পেটানো গেলে, ইজরায়েলের রাবাইদের পেটানো গেলে, এদেশের কাঠমোল্লাদের ছাড় দেয়ার যৌক্তিকতা কী ছিলো? সেটা নিজেরাই ভেবে দেখুন।
৩.
অন্তত ১০ দিন আগে বন্ধ করে দেয়া উচিৎ ছিলো সকল বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর। কেউ আসবেনা, বেরও হবেনা। এই নীতিই কঠিনভাবে অনুসরণ করা উচিৎ ছিলো শুরু থেকেই। কিন্তু তা করা হয়নি। ফলে সমানে ঘটেছে অনুপ্রবেশ। শুরু থেকেই এই দায়িত্বটা সশস্ত্র বাহিনীর হাতে দিলে এ বিপর্যয় হয়তো এড়ানো সম্ভব হতো।
৪.
সর্বশেষ গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের খেয়ালখুশিমতো যেভাবে লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস কর্মীকে জড়ো করা হলো জরুরি অবস্থার মধ্যেই, এটা করতে দেওয়া উচিৎ ছিলোনা কোনো অবস্থাতেই। কিছু মানুষের লোভের কারণে এবার হয়তো চরম মূল্য দিতে হতে পারে দেশবাসীকে।
বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর মিছিল প্রতিদিন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। সেই লাশের মিছিলে এখন ধীরে ধীরে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশিদের নাম। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই। আর সেইসাথে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। নতুন নতুন রোগী ধরা পড়ছে প্রতিদিনই। আর সেইসাথে রয়েছে ক্ষুধা আর কান্নার হাহাকার।
১৫টি জেলা আক্রান্ত ইতোমধ্যেই। যা ৬৪ হওয়ার শঙ্কা কিছুদিনের মধ্যেই। আর সেইসাথে সম্ভাবনা অন্তহীন মৃত্যুর মিছিল দেখার। প্রস্তুত থাকুন!
"দূর আকাশে ঝড় উঠেছে, ঘনিয়ে এসেছে রাতি"।
মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।
আপনার মন্তব্য