রাবি প্রতিনিধি

১৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৬:৪৩

রাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের উত্তেজনা, মধ্যরাতে গুলি

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দলীয় কর্মীকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার আব্দুস সালাম লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী। মারধরকারী সাদ্দাম হোসাইন রাবি ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সস্পাদক এবং বর্তমান সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী। মারধরের প্রতিবাদে হল ফটকে তালা লাগিয়ে সাদ্দাম হোসাইনসহ হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে বাকির অনুসারীরা। এ ঘটনার জের ধরে গভীর রাতে ওই হলে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, মাদার বখ্শ হলে রাজনৈতিক ব্লক করার বিষয়ে আলোচনা করতে সাদ্দাম হোসাইন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাত ১১টার দিকে মাদার বখ্শ হলের অতিথি কক্ষে আলোচনায় বসেন। এসময় তারা ২১১ নম্বর কক্ষের ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুস সালামকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। রাবি শাখার সভাপতি ও সম্পাদকের মোবাইল নম্বর না থাকায় সভাপতির অনুসারী সাদ্দাম একপর্যায়ে বাকির অনুসারী সালামকে মারধর করেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হল গেইটে তালা ঝুলিয়ে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাকিবুল হাসান বাকি। সেখানে বহিরাগত কয়েকজনকেও দেখা যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে অন্য আবাসিক হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১২টার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা বাকি বিষয়টি মানতে নারাজ হন। একপর্যায়ে বাকি মোবাইলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আশ্বাসে শান্ত হয়। কিছুক্ষণ পর তৃতীয় ব্লক থেকে পরপর দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মী হলে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।

মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সভাপতির অনুসারী সাদ্দাম হোসেন বলেন, সে (সালাম) যাই করুক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নম্বর রাখা উচিত। সেটা তার কাছে নেই, এজন্য ‘খুব বকাঝকা’ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, হল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাকির একজন ছোট ভাইয়ের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। জানতে পেরে আমি ও সাধারণ সম্পাদক রুনুসহ অন্যরা গিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।

তবে মীমাংসা হয়নি দাবি করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, শুধুমাত্র আমার সঙ্গে রাজনীতি করায় সালামকে মারধর করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান লিটনের আশ্বাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শান্ত হয়েছে, বিষয়টি মীমাংসা হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু শুনিনি এবং কিছুই জানি না। তবে তাকে রাত দেড়টায় হলের সামনে দেখা যায় বলে ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়।

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত