হিলারি-ট্রাম্পের নির্বাচনী যুদ্ধ যেখানে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকানদের হওয়ার কথা ছিল সেখানে নিজ দলের অনেকেরই সমর্থন পাচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পকে সমর্থনের বদলে ধনী রিপাবলিকানদের অনেকেই ঝুঁকছেন হিলারির দিকে। একই সঙ্গে  হিলারির পক্ষে অন্যান্য রিপাবলিকানদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন তারা।

এ প্রচেষ্টায় জড়িত কয়েকজন রয়টার্সকে বলেছেন, ট্রাম্পকে নিয়ে যারা হতাশ সেইসব রিপাবলিকানের কাছ থেকে অর্থ এবং হিলারির পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে।

নারী, মেক্সিকান, মুসলিম এবং প্রবীণ সেনাসহ অনেককে নিয়েই বহু বিতর্কিত মন্তব্য করে রিপাবলিকান দাতাগোষ্ঠীর বিরাগভাজন হয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ী ট্রাম্প। তাকে নিয়ে রিপাবলিকান দলের মধ্যে অনেকটাই বিভক্তি দেখা দিয়েছে। রিপাবলিকান হাউস স্পিকার পল রায়ান এবং দলটি থেকে নির্বাচিত সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট সিনিয়র ও জুনিয়র বুশসহ ঊর্ধ্বতন অনেক সদস্যই ট্রাম্পর্কে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

ধনী দাতা শ্রেনীর রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের প্রতি নাখোশ হয়ে এখন হিলারিকেই বেছে নিচ্ছেন। ধনী এসব রিপাবলিকান হিলারির প্রচারে অনেকটাই পরিবর্তন এনে দিতে পারবেন। ওয়ালস্ট্রিটের মতো বড় দাতারা হিলারির মার্কেটিং প্রচারণায় বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা করতে পারবে।

যুক্তিবাদী রিপাবলিকানদেরকে পক্ষবদল করতে প্রভাবিত করতেও সক্ষম হবে তারা। হিলারির জন্য রিপাবলিকানদের অর্থ সংগ্রহ এখন প্রাথমিক পর্যায়ে আছে বলে জানানো হয়েছে খবরে।

ট্রাম্পের মুখপাত্র হোপ হিকস এ খবরের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

ওদিকে, হিলারির মুখপাত্র জেসি ফার্গুসন বলেছেন, ব্যবসায়ী নেতারা হিলারির অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণে এবং ট্রাম্পকে বিশ্বাস করা যায় না একারণে হিলারিকে সহায়তা করছেন। হিলারির পক্ষে প্রচার চালাতে রিপাবলিকান লবি গ্রুপের সহায়তায় প্রাথমিকভাবে দুটি টিমও গঠিত হয়েছে।

বুধবার রপাবলিকানদের অর্থদাতা কোটিপতি সেথ ক্লারম্যান বলেছেন, তিনি হিলারিকেই নির্বাচনে জেতানোর জন্য কাজ করে যাবেন। ট্রাম্পকে মেনে নেওয়া যায় না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তাছাড়া, সিনেট নির্বাচনে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টটেটিভস স্পিকার পল রায়ান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী অ্যারিজোনার সিনেটর জন ম্যাককেইনকে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েও ট্রাম্প দলে কোন্দল বাড়িয়েছেন।

৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। একইদিনে অ্যারিজোনা ও উইসকনসিনে সিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি রায়ান বা ম্যাককেইন কাউকেই সমর্থন করবেন না। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান রেইন্স প্রেইবাস। ফলে সবমিলিয়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানও বিশৃঙ্খলায় পড়েছে।