অনলাইন ডেস্ক

২২ আগস্ট, ২০১৬ ১৮:০১

মামলার বিষয় যখন ‘রসগোল্লার মালিকানা’

একদিকে পশ্চিমবঙ্গ, আর অন্য দিকে ওড়িশা- শুরু হলো এক 'ঐতিহাসিক যুদ্ধ'; বিষয়টি রসগোল্লার মালিকানা!

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক 'এবেলা'র এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রসগোল্লার জিওগ্র্যাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) স্বীকৃতি পেতেই এই ঐতিহাসিক যুদ্ধের অবতারণা।

এতে বলা হয়েছে, রসগোল্লার মালিকানা চেয়ে জিআই স্বীকৃতির জন্য চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্টারে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আবেদন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এর জন্য সোমবার রাজ্যে আসার কথা জিআই-এর কর্মকর্তারা। সল্টলেকে রসগোল্লার মালিকানা নিয়ে এই শুনানি হবে।

রসগোল্লার মালিকানা পেতে রাজ্য সরকারের হাতিয়ার 'চৈতন্য চরিতামৃত' গ্রন্থ। রসগোল্লা যে বাংলার তার প্রমাণ দিতে গিয়ে কেন্দ্রের কাছে 'চৈতন্য চরিতামৃত'-এর রসগোল্লা নিয়ে উল্লিখিত অংশও আবেদনপত্রে উদ্ধৃত করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার।

বাংলার মিষ্টি বিশারদদের মতে, বয়সের ভারে রসগোল্লা চৈতন্যদেবের থেকেও পুরনো। রসগোল্লাকে কেন্দ্র করে ওড়িশা সরকার জগন্নাথ ও লক্ষ্মীদেবীর লোককাহিনীর উল্লেখ করে তা ঠিক নয় বলেও দাবি বাংলার মিষ্টি গবেষকদের মতে।

তাদের দাবি, ওড়িশায় যাকে রসগোল্লা বলে চালাতে চায় তা আসলে ‘ক্ষীরমোহন’। লাল রঙের এই মিষ্টি চিনি নয় গুড়ের তৈরি। সন্ন্যাস জীবনে চৈতন্য দেব বেশ কিছুদিন পুরীতে কাটিয়েছিলেন। সে সময় তার উদ্যোগেই জগন্নাথদেবের ৫৬ ভোগে রসগোল্লাকে সামিল করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

তবে, রসগোল্লার জিআই স্বত্বাধিকার পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী রাজ্যের বিজ্ঞান প্রযুক্তি দফতরের কর্তারা। তাদের মতে, রসগোল্লার অধিকার পেতে ওড়িশা এখনও কোনও আবেদন করেনি। উপরন্তু, কোনও জিনিসের উপর জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়, জিনিসটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে কারা কাজ করেছে। কোন ভৌগলিক অবস্থানে একে উৎপাদন করে জনপ্রিয় করা হয়েছে, সেটাই এখানে মানদণ্ড হিসাবে ধরা হয়।

সেইসঙ্গে রাজ্য বিজ্ঞান প্রযুক্তি দফতরের নোডাল কর্তা মহুয়া হোম চৌধুরীর মতে, ‘ওড়িশা সরকার যাই দাবি করুক, রসগোল্লার সঙ্গে বিশ্বজুড়ে বাংলার নামই জড়িয়ে আছে।’ তবে, সবকিছু ঠিকঠাক চললেও রসগোল্লার জিআই স্বীকৃতি পেতে অন্তত এক বছর লাগার কথা। জয়নগরের মোয়ার জিআই স্বত্ব পেতে রাজ্য ২০১৩ সালে মামলা করেছিল। সেই জিআই স্বীকৃতি মেলে ২০১৫ সালে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত