অনলাইন ডেস্ক

২৫ আগস্ট, ২০১৬ ০১:৫৫

তাবিজের কারণে বাংলাদেশি ইমামকে হত্যা করে আইএস

রোগ নিরাময়ের জন্য তাবিজ বানানোর কারণে বাংলাদেশি ইমাম জালাল উদ্দিনকে হত্যা করে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের দুই সমর্থক।  মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে বাংলাদেশি ইমাম হত্যা মামলার শুনানিতে এ কথা বলা হয়। খবর যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের।

খবরে বলা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ম্যানচেস্টারের রচডেলে একটি শিশুপার্কের সামনে হাতুড়ির মতো কিছু দিয়ে জালাল উদ্দিনের (৭১) মাথায় ও মুখে অসংখ্য আঘাত করা হয়। জালাল উদ্দিন যে মসজিদে ইমামতি করতেন, সেখান থেকেই তাঁকে হত্যার জন্য অনুসরণ করা হয়। সেদিনও তিনি মসজিদে নামাজ পড়ে এক বন্ধুর বাসায় দাওয়াতে যান। সেখান থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে হত্যা করা হয়।
রাত পৌনে নয়টার দিকে পার্কের সামনে দুই কিশোরী অচেতন অবস্থায় জালাল উদ্দিনকে দেখতে পায়। হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
কোর্টে মামলার শুনানিতে বলা হয়, হত্যাকারী দুই আইএস সমর্থক মোহাম্মদ হুসেইন সাঈদী (২২) এবং মোহাম্মদ আবদুল কাদির (২৪) গত বছর ওই ইমামকে রোগ আরোগ্যে কোরআনের আয়াত দিয়ে তাবিজ বানাতে দেখেন। এটাকে ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’ বিবেচনা করে ওই ইমামের প্রতি তাঁদের ঘৃণার জন্ম হয়।

ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে এ হত্যা মামলার শুনানিতে প্রসিকিউটর পল গ্রেনি জুরিকে উদ্দেশ করে বলেন, শান্ত, বিনয়ী ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় জালাল উদ্দিন রোগ নিরাময়ে ইসলামি পন্থা বা রুকইয়া চর্চা করতেন। আইএস এ ধরনের চর্চাকে কালো জাদু বা ব্ল্যাক ম্যাজিক বলে থাকে। আইএস অনুগত ব্যক্তিদের বলে থাকে, এ ধরনের ব্যক্তিদের দেখে থাকলে ওই ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি প্রদান, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করতে হবে। ওই দুই তরুণ ইমামকে রুকইয়া চর্চা করা অবস্থায় দেখেছেন। আইএসের সমর্থক হওয়ায় তাঁরা মনে করেছেন, ইমামকে হত্যা করার মতো কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।

তিনি জুরিকে জানান, সাঈদী দাবি করেছেন, তিনি আইএস অথবা এ ধরনের সহিংস সন্ত্রাসবাদিতা সমর্থন করেন না। অথচ ঘটনার সাক্ষ্য-প্রমাণ দেখলেই বোঝা যায় এই দাবি একেবারেই সত্য নয়। ওই দিন সাঈদী গাড়ি চালিয়ে কাদিরকে নিয়ে যান পার্কের সামনে। সাঈদী খুব ভালো করেই জানতেন যে কাদির জালাল উদ্দিনকে হত্যা অথবা কমপক্ষে গুরুতর আহত করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।

এদিকে সাঈদী এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। আর কাদির ঘটনার পরপরই বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত