সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

০৩ মে, ২০১৭ ১৬:১৬

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশি নারীর টুইট

কাজের প্রলোভনে ভারতে গিয়ে এক বাংলাদেশি নারী জানতে পারেন তিনি মানব পাচারকারীদের কবলে পড়েছেন। এরপর তাকে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। অবশ্য ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পুনের বুধারপথ থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু এরপরও তার মুক্তি মেলেনি। নানা আইনি জটিলতার পর সম্প্রতি তার দেশে ফেরার সুযোগ হয়েছে।

অবশ্য দেশে ফেরার সুযোগ হলেও একটি সমস্যা এখনও তার রয়েই গেছে। সেটি হচ্ছে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় তাকে অনেকে টিপস দিয়েছিল। যার পরিমাণ সবমিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার রূপি। কিন্তু সমস্যাটি হচ্ছে এর সবই বাতিল নোট। অর্থাৎ ভারতের প্রধানমন্ত্রী যে নোটগুলো হঠাৎ বাতিলের ঘোষণা দেন সেগুলো।

বন্দিদশা আর নানা ঝামেলার কারণে তার কাছে থাকা বাতিল নোটগুলো পরিবর্তনের সুযোগ হয়নি। আর সুযোগ যখন মিলল তখন নোট পরিবর্তনের সেই সুযোগও ফুরিয়ে গেছে। তাহলে দেহ বিক্রির কষ্টের অর্থ নিয়ে কি করবে সেই বাংলাদেশি নারী?

তারই উত্তর জানতে সেই নারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে টুইট করেছেন। টুইট বার্তায় মেয়েটি তার জীবনের নানা কথাও তুলে ধরেছেন। জানিয়েছেন, ভারতে আসার আগে সে বাংলাদেশে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করত। অবশ্য তার আগে সে গৃহিণী ছিল। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে ৩ বছর ঘর করার পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

এরপর গার্মেন্টস’এ কাজের সুযোগ পেলেও বেতন ছিল খুবই কম। মাত্র ৯ হাজার টাকায় সংসার চালানো কঠিন হওয়ায় একজন তাকে ভারতে কাজের প্রলোভন দেখায়। জানায়, সেখানে কাজ করলে কমপক্ষে ১৫ হাজার রূপি উপার্জন করতে পারবে।

সংসারের অভাব ঘোচাতে তাই সেই প্রস্তাবে রাজি হন তিনি। কিন্তু দেশ ত্যাগের পর থেকেই তার জীবনে দুঃস্বপ্নের শুরু। সেখানে প্রলোভন দেখানো ব্যক্তিটি তাকে এক নেপালি নারীর কাছে ৫০ হাজার রূপিতে বিক্রি করে দেয়। এরপর সেই নারী তাকে বেঙ্গালুরু’তে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে যৌন কর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়।

প্রায় দেড় বছরের কষ্টকর জীবনের পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ভারতের নিরাপত্তা হেফাজতে কাটাতে হয়। এখন স্বাভাবিক জীবনের দেখা পেলেও সেই অর্থ তো কোনো কাজে আসবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে তার আর্জি সময় পেরিয়ে গেলেও যেন তার কাছে থাকা অর্থগুলো পরিবর্তনের সুযোগ করেন দেয়া হয়।

অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নারী শুধু মোদীকেই নয়, জীবনের কষ্টের কথা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেও চিঠি লিখেছেন।

সূত্র: এনডিটিভি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত