সিলেটটুডে আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ নভেম্বর, ২০১৭ ২২:৪৩

শ্রীলংকায় বৌদ্ধ-মুসলিম দাঙ্গা, গ্রেপ্তার ১৯

শ্রীলংকায় ভুয়া সোশাল মিডিয়ার পোস্ট ও গুজবকে কেন্দ্র করে গিনটোলা শহরে মুসলিম-বৌদ্ধ সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪ জন আহত হয়েছে। শনিবার এর জের ধরে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।

শনিবার দেশটির আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রী সাগালা রত্নানায়েকে বলেছেন, পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পুর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকেরা বলেন, গত নভেম্বরের ১৩ তারিখ একজন মুসলিম নারী তার শিশু একজন সিংহলিজ তরুণের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হন। এতে তিনজনই আহত হন, এবং বাইক চালক ২৫ হাজার শ্রীলংকার মুদ্রা জরিমানা দিয়ে ঘটনার মিটমাট করে। মোটরসাইকেল চালককে জামিন দেয়া হয়।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনার জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ ছিল না, সেই হামলায় একজন মুসলিম আহত হয়। এর জের ধরে সিনহলি ব্যক্তির বাড়িতে হামলা হয় যাতে ১ জন সিনহলি আহত হয়। শুক্রবার ঘটনা আরো গুরুতর রূপ ধারণ করে যাতে রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতারা উসকানি দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আরেকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটে যার ফলে কারফিউ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানি দিয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে আছেন এক নারী যিনি গুজব ছড়িয়ে ছিলেন যে মুসলিমরা বৌদ্ধ মন্দিরে আক্রমণ করতে যাচ্ছে। পুলিশ এই সংঘাত দুই সম্প্রদায়ের কিছু উগ্রবাদীদের সৃষ্ট বলে অভিহিত করেছে।

আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রী সাগালা রত্নানায়েকে বলেন, আমি জানি কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী সামান্য বিবাদের বিষয়টি সিনহলি-মুসলিম সংঘাতে রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানাবো তাদের প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হতে।

তিনি বলেন,  সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়াতে ভুয়া ভিডিও ও সংবাদ সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা বর্ণবাদী প্রচারণা চালাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চলতি বছর শ্রীলংকায় সংখ্যালঘু মুসলিম ও সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শ্রীলংকার ২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বৌদ্ধ, আর ৯ শতাংশ মুসলিম। শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা গত জুনে উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের রোষের শিকার মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনীতিকদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছেন। গত দুই মাসে মুসলিম দোকান ও মসজিদে পেট্রল বোমা হামলা সহ ২০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালে উগ্র বৌদ্ধদের সঙ্গে দাঙ্গায় ৩ মুসলিম নিহত হয়েছিল।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স ও ডেইলি মিরর লংকা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত