সিলেটটুডে আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৭ ১২:৩৩

মুগাবের বিদায় বুধবার!

জিম্বাবুয়ের ক্ষমতাসীন জানু-পিএফ পার্টির নেতারা বলেছেন, বুধবারের মধ্যে প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবকে পদ থেকে বিদায় করা হবে।

স্ত্রীকে অবৈধভাবে সাংবিধানিক ক্ষমতা দেওয়াসহ অন্যান্য অভিযোগে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের বিরুদ্ধে কয়েক ঘণ্টা বাদে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।

মঙ্গলবারই তার বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনা হচ্ছে। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা পল মানগাওয়ানা বলেছেন, এই প্রক্রিয়া শেষ করতে দুই দিন সময় লাগবে এবং বুধবারের মধ্যে মুগাবের বিদায় নিশ্চিত করা যাবে।

প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে রবার্ট মুগাবেকে ২৪ ঘণ্টারও কম সময় বেধে দেয় জানু-পিএফ পার্টি। সোমবার দুপুরে সেই সময় শেষ হয়।

সেনা কর্মকর্তারা বলেছেন, মুগাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের একটা ‘রোডম্যাপ’ রয়েছে। এ ছাড়া প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়া দ্রুত ক্ষমতায় ফিরবেন বলে জানিয়েছে তারা।

মুগাবের পর প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তার স্ত্রী গ্রেস মুগাবে ও এমারসন নানগাগওয়া। কিন্তু চলতি মাসের প্রথম দিকে নানগাগওয়াকে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দলীয় পদ থেকে বরখাস্ত করেন মুগাবে। মূলত স্ত্রী গ্রেসকে ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্যই এ কাজ করেছিলেন মুগাবে। এর জের ধরেই সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের ক্ষমতা দখল করে এবং ৯৩ বছর বয়সি মুগাবেকে সপরিবারে গৃহবন্দি করে।

১৯৮০ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর আজ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের শাসন রয়েছে মুগাবের হাতে। দীর্ঘ ৩৭ বছরের শাসনামলে তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ উঠলেও স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক হিসেবে সেনাবাহিনীর অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন তিনি। এখন বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়েছেন। আগামী বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রার্থী হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। এই সুযোগে তার ৫২ বছর বয়সি স্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট পদে উত্তরসূরি করার পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ভাইস প্রেসিডেন্ট নানগাগওয়াকে বহিষ্কার করেন এবং তার স্থানে স্ত্রী গ্রেসকে বসানোর পরিকল্পনা করেন।

মুগাবের জানু-পিএফ পার্টির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা নানগাগওয়াকে বহিষ্কারে সেনাবাহিনী ক্ষোভ জানায় এবং শেষ পর্যন্ত রক্তপাতহীন নীরব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ক্ষমতার পালা বদলের জন্য সেনাবাহিনীর সমর্থনে মুগাবের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে বিক্ষোভ করে জনগণ। মুগাবের নিজের দল তাকে পদত্যাগের জন্য আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু পদত্যাগের ঘোষণা না দিয়ে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় দলীয় কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করার অভীপ্সা প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে অভিশংসনের পথ বেছে নিয়েছে তারই রাজনৈতিক অনুসারীরা। মঙ্গলবার জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্টে মুগাবের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত