সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ০০:৪৩

মিনা ট্রাজেডি: ইরানকে দায়ি করছে সৌদি সংবাদমাধ্যম

মিনায় শয়তান স্তম্ভে পাথর ছোঁড়ার সময়ে পদদলিত হয়ে হাজিদের মৃতুর ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে ইরান আর সৌদি সংবাদমাধ্যমগুলো।

এ ঘটনায় সৌদি আরব কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনাকে দায়ি করে একাধিক সংবাদ প্রচার করেছে ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো। একই সঙ্গে তারা দাবি করেছে এ ঘটনায় দুই হাজারের বেশি হাজি নিহত হয়েছে, যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে মৃতের সংখ্যা ৭৬৯।

এদিকে, মিনায় পদদলনের ঘটনার জন্য অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে ইরানের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে তদন্তের দাবি তোলার পরওই ঘটনার জন্য একদল ইরানি হজযাত্রীকে দায়ী করে প্রতিবেদন এসেছে সৌদি গণমাধ্যমে।

দৈনিক আশরাক আল আসওয়াতের বরাত দিয়ে সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৩০০ ইরানির একটি দল ‘নির্দেশনা না মেনে’ ভুল সড়কে গেলে অতিরিক্ত চাপে পদদলনের এই ঘটনা ঘটে।    

ইরানি হজযাত্রীদের তত্ত্বাবধানে থাকা এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় তিনশ ইরানির ওই দলটি নিয়ম অনুযায়ী মুজদালিফা থেকে নিজেদের ক্যাম্পে না ফিরে সরাসরি জামারাতের দিকে অগ্রসর হয়। এরপর তারা আবার উল্টো পথে ২০৪ নম্বর সড়ক ধরে এগোলে পদদলনের ঘটনা ঘটে।  

পত্রিকাটি লিখেছে, মুজদালিফা থেকে জামারাতে পাথর ছুড়তে যাওয়ার আগে হজযাত্রীদের নিজেদের ক্যাম্পে বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। হজযাত্রীদের প্রতিটি দলের আলাদা আলাদা সময়ে পাথর ছোড়ার আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও ইরানি দলটি তা মানেনি। তারা উল্টো পথে এগিয়ে হজযাত্রীদের আরেকটি দলের সামনে পড়লে শুরু হয় হুড়োহুড়ি।

গত বৃহস্পতিবার হজের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে মিনায় ‘শয়তানের স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাওয়ার পথে পদদলনের এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭৬৯ জন নিহত ও ৯৩৪ জন আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে সৌদি সরকার।

নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩১ জন ইরানি রয়েছেন দাবি করে এরজন্য সৌদি আরবের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বেতারের খবরে বলা হয়, সৌদি বাদশাহর ছেলের গাড়িবহর ‘মিনার কেন্দ্রস্থলে আসায়’ তীব্র ভিড়ে পদদলনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এক বক্তৃতায় মিনার ঘটনার তদন্ত দাবি করেন।

পদদলনের ঘটনার পর সৌদি আরবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালেদ আল-ফালিহকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, হাজিরা দিকচিহ্ন সঠিকভাবে অনুসরণ না করায় দুর্ঘটনা ঘটে।

আর সৌদি হজ কমিটির প্রধান প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সালকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছিল, ‘আফ্রিকান নাগরিকসহ হাজিদের একটি দল’ ওই ঘটনার জন্য দায়ী।
তবে ওই তথ্য ‘সঠিক নয়’ দাবি করে সৌদি সরকারের মুখপাত্র সুলতান আল-দোসারি শনিবার বলেছেন, প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সাল আফ্রিকানদের দায়ী করে কোনো মন্তব্য করেননি।

সৌদি আরব ও ইরান- দুই দেশই মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের দাবিদার। বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলারের হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি এককভাবে সৌদি আরবের হাতে না রেখে ‘বহুজাতিক’ ব্যবস্থাপনায় হওয়া উচিত বলেও দাবি রয়েছে ইরানের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত