সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ এপ্রিল, ২০১৬ ১০:৫২

নিজামীর রিভিউ শুনানি পিছিয়ে এবার ৩ মে

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউর সময় আবেদন দ্বিতীয়বারের মত মঞ্জুর করে ৩ মে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। এর আগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনর্বিবেচনার জন্য ২৯ মার্চ আবেদন করেন নিজামী।

নিজামীর রিভিউ দ্রুত শুনানির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৩০ মার্চ চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার বিষয়টি ৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। ওই দিন নিজামীর আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিভিউ শুনানির জন্য এক সপ্তাহ সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত।

সে অনুযায়ী আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউয়ের) জন্য নিজামীর আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকায় আসে। রোববারের কার্যতালিকায় রিভিউ আবেদনটি ১৯ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত ছিল। সঙ্গে ছিল শুনানি মুলতবির জন্য করা একটি আবেদনও। এদিন আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দ্বিতীয়বারের মত সময় বাড়ালো। 

গত ২৯ মার্চ সকালে ৭০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনটি করেন নিজামীর আইনজীবীরা। এতে মোট ৪৬টি কারণ দেখিয়ে আপিল বিভাগের ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আরজি জানানো হয়েছে।

পরদিন (৩০ মার্চ) রিভিউ আবেদনটির  দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিনই এ আবেদনের শুনানি নিয়ে রিভিউ শুনানির দিন ধার্য করতে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন মির্জা হোসেইন হায়দারের আদালত।

এরপর রিভিউ  আবেদনের শুনানি পেছাতে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ছয় সপ্তাহের সময়ের আবেদন জানান নিজামীর আইনজীবীরা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ০৬ জানুয়ারি নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

গত ১৫ মার্চ আপিল মামলাটির ১৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায়টি রাতেই বিচারিক আদালতে গেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর পর পরই মৃত্যু পরোয়ানাসহ পূর্ণাঙ্গ রায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়, ঢাকার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

পরদিন ১৬ মার্চ সকালে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এর কনডেম সেলে থাকা নিজামীকে মৃত্যু পরোয়ানা ও পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়।

আইন অনুসারে পরোয়ানা শোনার পর থেকে নিজামী আপিল বিভাগের চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের রিভিউ আবেদন করতে পারবেন ১৫ দিনের মধ্যে, যার শেষ দিন ছিল ৩০ মার্চ। একদিন বাকি থাকতেই এ আবেদন করা হয়।

এর মধ্যে নিজামীর ছেলে নাজীব মোমেনসহ আইনজীবীরা দুইবার এবং পরিবারের পক্ষ থেকে একবার কাশিমপুর কারাগারে দেখা করেছেন তার স্বজনেরা।

নিজামীকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং হত্যা-গণহত্যা ও ধর্ষণসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে ৪টিতে ফাঁসি ও ৪টিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ৩টিতে ফাঁসি ও ২টিতে যাবজ্জীবন বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালের দেয়া অন্য ৩টি চূড়ান্ত রায়ে দণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন নিজামী, যার মধ্যে একটিতে ফাঁসি ও দু’টিতে যাবজ্জীবনের দণ্ডাদেশ ছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত