সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ মার্চ, ২০১৯ ১৬:৫০

৯ বছরে ৩৫ মামলার রায়ে ৮৭ যুদ্ধাপরাধীর সাজা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৯ বছরে ৩৫টি মামলায় রায়ে ৮৭ যুদ্ধাপরাধীর সাজা দিয়েছেন। বর্তমানে ৩৪টি মামলা বিচার ও প্রাক–বিচার পর্যায়ে রয়েছে। ২০১০ সালের ২৫ মার্চ এই ট্রাইব্যুনাল যাত্রা শুরু করে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা বাঙালিদের গণহত্যা ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ করে। সেসব অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়, যা ট্রাইব্যুনাল-২। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ২ ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করা হয়। এখন ১টি ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে এই ট্রাইব্যুনালে বিচার ও প্রাক–বিচারপর্যায়ে ৩৪টি মামলা রয়েছে, যার দুটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সবচেয়ে পরিচিত ও শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের বিচারের মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। ইতিমধ্যে সেসব মামলার রায় হয়ে​ গেছে। এখন স্থানীয় পর্যায়ে পরিচিত অপরাধীদের মামলার কার্যক্রম চলছে।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুসারে, ট্রাইব্যুনাল থেকে এ পর্যন্ত মোট রায়ের সংখ্যা ৩৫টি, যেখানে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ৮০। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়। তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুসারে, কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৯টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে ২৮টি মামলার কার্যক্রম চলমান আছে। আরও ২৪টি অভিযোগের তদন্ত চলছে, যেখানে আসামির সংখ্যা ৪৯।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল বলেন, ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা পূরণে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল সক্রিয় করা দরকার। কারণ, ৩৪টি মামলা এখন বিচারাধীন। একটি ট্রাইব্যুনাল স্বাভাবিকভাবে বছরে ৪ বা ৫টি মামলা নিষ্পত্তি করতে পারেন।

বিচারিক সব প্রক্রিয়া শেষে দণ্ড কার্যকর হয়েছে ৭ জনের। যাদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী এবং বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করছেন জামায়াতের দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম ও আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা আবদুল আলীম মারা যাওয়ায় তাদের করা পৃথক আপিল অকার্যকর ঘোষিত হয়েছে।

এদিকে, ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে। সর্বোচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায় আছে ২৮টি আপিল। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও মুহাম্মদ আবদুস সুবহান এবং জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মো. কায়সারের পৃথক আপিল শুনানির জন্য কয়েকবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে, তবে শুনানি হয়নি।

আপিল শুনানি ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সহসমন্বয়ক এম সানাউল হক। তিনি বলেন, ৩ বছর ধরে আপিল শুনানি থেমে আছে। এতে বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে একধরনের হতাশা দেখা যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত