অনলাইন ডেস্ক

০১ জুন, ২০২১ ২২:২৬

ত্বকের যত্নে মসুরের ডাল

মসুরের ডালে উপস্থিত প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (Anti-Oxidant), কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrates), ডায়াটারি ফাইবার (Dietary Fiber), ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড (Omega 3 Fatty Acid), ভিটামিন এ, সি, ই, কে এবং থায়ামিন (Thiamine) নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। সেই সঙ্গে ত্বকের ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিয়ে ত্বককে সুন্দর করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত মসুরের ডাল দিয়ে বানানো নানাবিধ ফেইস মাস্ক মুখে লাগাতে শুরু করলে ত্বকে প্রোটিনের ঘাটতি দূর হয়। ফলে ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠতেও সময় লাগে না। চলুন ত্বকের যত্নে মসুরের ডাল ব্যবহারের কিছু কারণ জেনে নেওয়া যাক।

ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে
অল্প সময়ে ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক, এমনটা চান কি? তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় মসুর ডালকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে ৫০ গ্রাম মসুর ডালকে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে উঠে পানিটা ছেঁকে নিয়ে ডালটা বেঁটে নিতে হবে। তারপর ডালের পেস্টটির সঙ্গে ১ চামচ কাঁচা দুধ এবং পরিমাণগত বাদাম তেল মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর পেস্টটি ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে হলেও ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। এই ভাবে প্রতিদিন ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবেন ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগবে না।

ফেইসওয়াশ হিসেবে কাজে লাগানে যায়
নানা কাজে সারাদিন আমাদের বাসার বাইরে কাটাতে হয়। ফলে পরিবেশ দূষণের কারণে ত্বকের বারোটা বেজে যেতে সময় লাগে না। এমন পরিস্থিতিতে দিনের শেষে মসুর ডাল দিয়ে ত্বককে পরিষ্কার করলে স্কিনটোনের উন্নতির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের কারণে ত্বকের কোন ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।

প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে ১ চামচ বাঁটা মসুর ডালের সঙ্গে ২ চামচ দুধ, অল্প পরিমাণে হলুদ এবং ৩ ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রণটি সারা মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।

ফেইস হেয়ার পরিষ্কার করে
অনেক মহিলাই আছেন যাদের মুখে অযাচিত লোম থাকে। এমন সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে ১ চামচ মসুর ডালের পাউডারের সঙ্গে ১ চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে এবং তার সঙ্গে যোগ করতে হবে ১ চামচ দুধ ও বাদাম তেল। সবকটি উপাদান মেশানোর পর মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ড্রাই ত্বকের যত্নে মসুরের ডাল
পরিমাণগত মসুর ডালের পেস্ট-এর সঙ্গে সমপরিমাণ গাঁদা ফুল মিশিয়ে ভাল করে বেটে নিয়ে এই পেস্টটি বানাতে হবে। তারপর সেটি কম করে হলেও ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখার পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

প্রসঙ্গত, ড্রাই স্কিনের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ব্রণের প্রকোপ কমাতে এবং ত্বককে নরম তুলতুলে করে তুলতেও এই ফেইস মাস্কটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

মৃত কোষের স্তর সরিয়ে ফেলে
ত্বকের উপরি অংশে জমে থাকা মৃত কোষের স্তর সরিয়ে স্কিনকে প্রাণবন্ত করে তুলতে এই ফেইস প্যাকটির কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে দু’বার পরিমাণগত মসুর ডালের পেস্টের সঙ্গে অল্প করে দুধ মিশিয়ে যদি মুখে লাগানো যায়, তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলা বা স্কিন বুড়িয়ে যাওয়ার মতে দুশ্চিন্তা একেবারে দূরে পালায়।

ত্বকের আর্দ্রতার ঘাটতি দূর করে
আপনার ত্বক কি বেজায় শুষ্ক? সেই সঙ্গে বলিরেখা দেখা দিতে শুরু করেছে নাকি? তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মসুর ডালের পেস্টের সঙ্গে পরিমাণগত মধু মিশিয়ে নিয়ে নিয়মিত মুখে লাগাতে শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন ধীরে ধীরে বলিরেখা কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ত্বকের ড্রাইনেসও কমে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথমে ১ চা চামচ মসুর ডালের পেস্টের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মেশাতে হবে। এরপর ভাল করে দুটি উপাদান মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পেস্টটি মুখে ঘষার পর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিলেই হবে।

ত্বককে নিমেষে সুন্দর করে তোলে
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে বেসন এবং দইয়ের কোন বিকল্প নেই বললেই চলে। তার উপর যদি এই মিশ্রণে অল্প করে মসুর ডাল মিশিয়ে দিতে পারেন, তাহলে তে কথাই নেই! কারণ এই তিনটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে বানানো পেস্টটি এত মাত্রায় পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর হয় যে ত্বক সুন্দর হয়ে উঠতে সময়ই লাগে না।

এখন প্রশ্ন হল, কি মাত্রায় এই তিনটি উপাদানকে মেশাতে হবে? এই পেস্টটি বানাতে প্রথমে ১ চা চামচ মসুর ডালের পাউডারের সঙ্গে সমপরিমাণ বেসন এবং দই মেশাতে হবে এবং তার সঙ্গে যোগ করতে পারেন অল্প করে হলুদও। এবার সবকটি উপাদান ভাল করে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত