সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:৫০

চা শ্রমিকের মজুরি ১২০ টাকা গ্রহণযোগ্য নয় : বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ

বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে একজন চা শ্রমিকের সর্বোচ্চ মজুরি দৈনিক ১২০ টাকা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।

শনিবার (১৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমনটা বলেন তারা।

বিবৃতিতে সংগঠনের সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. সুরুজ আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া বলেন, ‘১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ চা-সংসদের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চা শ্রমিকদের মজুরি এ ক্লাস বাগানে দৈনিক ১২০ টাকা, বি ও সি ক্লাস বাগানে যথাক্রমে ১১৮ টাকা ও ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

নেতৃবৃন্দ সরকার, মালিকপক্ষ ও চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী শ্রমিক নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যখন মোটা চালের কেজি ৪০/৪৫ টাকা, আলু ৫০/৫৫ টাকা, পিয়াজ ১০০ টাকা, ডাল ১০০/১১০ টাকা, বাজারে ৬০/৭০ টাকার নিচে কোন সবজি মিলছে না সেই সময়ে দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে কি করে একজন চা-শ্রমিক ৬/৭ জনের পরিবার চালাবে? তদুপরি স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে মজুরি ১০২ টাকা থেকে মাত্র ১৮ টাকা বৃদ্ধি করে ১২০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি চা-শ্রমিকদের কাজের পরিমাণ (নিরিখ) বাড়ানোর জন্য প্রত্যেকটি বাগানে উৎপাদনশীলতা কমিটি গঠন করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

তারা আরও বলেন, ‘মজুরি চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী শ্রমিকদের মজুরি ১ জানুয়ারি ২০১৯ সাল থেকে কার্যকর হয়ে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং স্থায়ী শ্রমিকদের এরিয়ার টাকা ৪ ভাগ করে প্রদান করা হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ২২ মাস পর চুক্তি করার কারণে প্রায় ৪০ হাজার ক্যাজুয়াল শ্রমিক বর্ধিত মজুরি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলেন, যার কারণে ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা নগদ প্রায় ১২ হাজার টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

বিজ্ঞাপন

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর পর চা-শিল্প সেক্টরে মজুরি নির্ধারণের জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করা হয় এবং সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ড মজুরি নির্ধারণের কাজ অগ্রসর করে চলেছেন, ইতোমধ্যে মজুরি বোর্ড ৫ টি সভা করেছে এবং আগামী ২২ অক্টোবর মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ সভা আহবান করা হয়েছে। শ্রমিকদের বিভিন্ন পক্ষ থেকে মজুরি বোর্ডের নিকট দৈনিক ৬৭০ টাকা, ৫৫০ টাকা, ৫০০ টাকা, ৪০০ টাকার আবেদন করা হয়েছে। সেরকম সময়ে কোন স্বার্থে মজুরি বোর্ডের কার্যক্রমকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে অতীতের ধারায় দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করা হলো? এমন কি চা-শ্রমিক ইউনিয়নও দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়ে ছিল। চা-শ্রমিকরা গত ৮ দিন ধরে সেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, অথচ চা-শ্রমিকদের অবগত না করেই দালাল নেতারা তলে তলে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করলেন। অথচ চা-শ্রমিকরা প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে প্রস্তুত ছিলেন, তাহলে কেন নেতারা আপোস করলেন?’

নেতৃবৃন্দ বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ ন্যায্য মজুরির দাবিতে চা ও রাবার শ্রমিকদের সৎ, সংগ্রামী, শ্রেণি সচেতন নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলান আহবান জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত