সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ অক্টোবর, ২০২০ ১৮:১৫

করোনায় শিশুরা যেন ঘরে বসে পড়া চালিয়ে যায়: প্রধানমন্ত্রী

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিশুরা যেন ঘরে বসে পড়া চালিয়ে যায়, সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৮ অক্টোবর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এস.এস.সি উত্তীর্ণ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ। এটি সত্যিই যে কোনো শিশুর জন্য খুব কষ্টকর। হয়তো এ রকম অস্বাভাবিক অবস্থা থাকবে না। তবু আমি তাদের বলব– মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। ঘরে বসে পড়ালেখা কর।

পড়ালেখার পাশাপাশি শিশুদের অঙ্কন-শরীরচর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, যে আর্ট করতে পারে, যে খেলাধুলা করতে পারে, সে সেটি করবে। নিজেদের ব্যস্ত রাখতে হবে। যখন স্কুল খুলবে, তখন তারা আবার ভালোভাবে স্কুলে যাবে।

কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও নির্দেশনা দেন সরকার প্রধান।

তিনি বলেন, আমি হয়তো মাস্কটা পরে বক্তৃতা দিচ্ছি না। কারণ আমার আশপাশে কেউ নেই। আমি একাই আছি। যারা আছেন, অনেক দূরে। সে জন্য আমার এটি সুবিধা আছে। কিন্তু যেখানে বেশি লোক সেখানে আমি নিজেও সবসময় মাস্ক পরে থাকি।

গণভবন প্রান্তে সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রকিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব ও সিলেট- আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী, উপদেষ্টা সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, ঢাকা মহানগর সভাপতি কে.এম শহিদ উল্যা উপস্থিত ছিলেন।
শেষে শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের রূহের মাগফেরাত, দেশ ও দশের মঙ্গল কামান করে মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফিজ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান।

ভিডিও কনফারেন্সে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণ প্রান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী উপস্থিত ছিলেন।

জন্মদিন উপলক্ষে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ রাসেলের ‘ম্যুরাল’ উন্মোচন ও ‘শহীদ শেখ রাসেল ভবন’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া শহীদ শেখ রাসেল- এনিমেটেড ডকুমেন্টরি ‘বুবুর দেশ’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ রাসেলের জীবনীর ওপর প্রকাশিত বই ‘শেখ রাসেল আমাদের আবেগ, আমাদের ভালোবাসা’র মোড়ক উন্মোচন ও ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন তিনি।

শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কার্যক্রম সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র অবলোকন ‘স্মৃতির পাতায় শেখ রাসেল’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণসহ অন্যান্য কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

এর আগে সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।

উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন আজ রোববার। ১৯৬৪ সালের এই দিনে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড থেকে সেদিনের অবুঝ শিশু রাসেলও রেহাই পাননি।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত