সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ অক্টোবর, ২০২০ ১৮:৩৬

বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে জাতির পিতা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন: পরিবেশ মন্ত্রী

মহান স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য মুজিববর্ষে এক কোটি গাছের চারা রোপণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ধারাবাহিক এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে বৃক্ষের চারা রোপণ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

সোমবার (১৯ অক্টোবর)মন্ত্রীসহ এমপি আহমেদ ফিরোজ কবির, এমপি তানভীর ইমাম, এমপি মো. শফিকুল আজম খাঁন এবং এমপি জয়া সেন গুপ্তা বৃক্ষের চারা রোপণ করেন।

বৃক্ষরোপণ শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হচ্ছে। তারই আলোকে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে এক কোটি বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা সমাপ্তির পথে রয়েছে। স্পিকারের নেতৃত্বে সংসদ এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন বঙ্গবন্ধু চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন, অপরদিকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যশৈলীর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে।

জাতির পিতার উদ্ধৃতি দিয়ে সংসদ সদস্যগণ বলেন, ‘দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য এই বৃক্ষরোপণ অভিযানের সময় এবং পরে অধিক বৃক্ষরোপণ করে সরকারের প্রচেষ্টাকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলা। তাই আমরা দেশের জনপ্রতিনিধি, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, সমাজসেবী ও আপামর জনসাধারণের কাছে আবেদন করছি, তারা যেন নিজেদের এলাকায় স্কুল, কলেজ, কলকারখানা, রাস্তাঘাট এবং বাড়িঘরের আশপাশে যেখানেই সম্ভব মূল্যবান গাছ লাগিয়ে এবং তার পরিচর্যা করে সরকারের এ মহান কর্মসূচিকে সফল করেন।’

সংসদ সদস্যগণ আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে জাতির পিতা বৃক্ষরোপণের ওপরই জোর দিয়েছিলেন বেশি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির এই উপলব্ধির বহিঃপ্রকাশও ঘটেছিল নানাভাবে। সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে বঙ্গবন্ধু সেসময় সবাইকে বৃক্ষপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য গণভবন, বঙ্গভবন ও বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ লাগিয়েছিলেন। এছাড়া তার স্মৃতিবিজড়িত কয়েকটি গাছ আছে জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায়। ইতিহাসের মহানায়কেরাই কেবল জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে পারেন। উজ্জ্বল স্বাক্ষর রাখতে পারেন জীবনের পরতে পরতে। আর এমন মহানায়ক পাওয়া তো যে কোনো জাতির জন্যই পরম ভাগ্যের। বাঙালি জাতি হিসেবে আমরাও অনেক সৌভাগ্যবান। আমরা পেয়েছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন প্রজ্ঞাবান সূর্যসন্তানকে। যার জন্মই হয়েছিল জাতি হিসেবে আমাদের প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে। তার দূরদর্শী কর্মকাণ্ড থেকে বাদ যায়নি বৃক্ষরোপণের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিও। আমরা এখন যা কেবল ভাবতে শুরু করেছি, তিনি ভেবেছিলেন প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পথের পাশে, মহাসড়কের ধারে, বাড়ির আনাচে-কানাচে ও পতিত স্থানে ফলদ বৃক্ষরোপণের ডাক দিয়েছিলেন। তার এই দূরদর্শী ভাবনা বর্তমান সময়ে এসে কতটা যুগোপযোগী, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি জানতেন, একটি ফলগাছ একসঙ্গে অনেক মানুষের বিচিত্র চাহিদা পূরণ করতে পারে। তা ছাড়া, ফল শুধু মানুষই খায় না, জীবজগতের একটি বিশাল অংশও ফল খেয়ে বেঁচে থাকে। দেশের বৃক্ষ আন্দোলনের ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সংসদ ভবন চত্বরে ৩৫০ থেকে ৫০০ টি বৃক্ষের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ২৬ জুলাই তারিখে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। পর্যায়ক্রমে সকল সংসদ-সদস্যবৃন্দ সংসদ ভবন চত্বরে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন মর্মে সিদ্ধান্ত রয়েছে।

উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী-২০২০ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সারাদেশে এক কোটি বৃক্ষের চারা রোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত