সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ নভেম্বর, ২০২০ ১৮:৫৩

বিএনপি-জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে হেফাজত

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে জামায়াত-বিএনপি সমর্থকদের আনার তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ করেছে প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর অনুসারীরা।

শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শফীর ছেলে আনাস মাদানিরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে তাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তাই তিনি উপস্থিত হননি।

হেফাজতের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে রোববার যে সম্মেলনের আহ্বান করা হয়েছে সেটা না করতে অনুরোধ জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর অনুসারীদের কারণে ওই সম্মেলনে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পাননি বলে জানিয়েছেন শফী সমর্থকরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন আহমদ শফীর শ্যালক মঈন উদ্দিন। প্রশ্নের জবাব দেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহী।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে হুজুরের হাতে গড়া অরাজনৈতিক কওমি সংগঠনকে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবির, বিএনপির হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘এটা দিনের মতো পরিষ্কার, জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই কাউন্সিল।… আজ যারা কাউন্সিল করছে তাদের কারও কারও ছবি দেখা গেছে তাদের (জামায়াত) সঙ্গে।’

সংবাদ সম্মেলনে আহমদ শফীর মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ এনে বিচারিক তদন্তের দাবিও জানানো হয়। বলা হয়, ‘হযরতের হত্যার বিচারের পূর্বে কোনো কাউন্সিল না করার জন্য হেফাজতে ইসলামের সকল দায়িত্বশীলদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এক পক্ষের সম্মেলন আয়োজনের মধ্যে আরেক পক্ষের সংবাদ সম্মেলন সংগঠনের বিভক্তির প্রকাশ কি না, এমন প্রশ্নে মইনুদ্দিন রুহী বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা। যারা ‍উনার মতাদর্শে থাকবে তারাই আসল হেফাজতে ইসলাম।’

শফীকে হত্যার অভিযোগ

লিখিত বক্তব্যে মঈন উদ্দিন দাবি করেন, শাহ আহমদ শফী স্বাধীনতার পক্ষে থাকায় তার উপরে বহুবার আঘাত এসেছে। তিনি প্রকাশ্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য ও বই লেখায় তার প্রতি জামায়াত-শিবিরের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিনের।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাটহাজারী মাদ্রাসায় মাদ্রাসায় জামায়াত-শিবিরের ‘লেলিয়ে দেয়া ক্যাডার বাহিনী’ হাঙ্গামা করে বলেও অভিযোগ করা হয়।

আল্লামা শফীকে মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল দাবি করে মঈন উদ্দিন বলেন, ‘এতে তিনি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থায় হজরতের অক্সিজেন লাইন বারবার খুলে দেওয়ায় তিনি মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং কোমায় চলে যান। অনেক কষ্ট করে চিকিৎসার জন্য বের করা হলেও রাস্তায় পরিকল্পিতভাবে অ্যাম্বুলেন্স আটকিয়ে সময়ক্ষেপণ করে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়।’

কাউন্সিল অবৈধ দাবি

রোববার হেফাজতের যে কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, তাকে অবৈধ বলেও দাবি করে হয় সংবাদ সম্মেলনে। জানানো হয়, হেফাজতের ইসলামের বর্তমানে কোনো শুরা কমিটি নেই।

শুরা কমিটি করতে ২০১৪ সালে প্রস্তাব করা হয়েছিল। তখন আল্লামা শফী বলেন শুরা করলে সারাদেশের আলেমদের নিয়ে করতে হবে। কিন্তু এতে হাজার খানেক সদস্য হয়ে যাবে বলে পরে আর শুরা কমিটি করা হয়নি।

মঈন উদ্দিন বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমিরের অবর্তমানে সিনিয়র নায়েবে আমির ভারপ্রাপ্ত হবেন। কেন্দ্রীয় কমিটি ও নির্বাহী কমিটির মতামতের ভিত্তিতে আমির নির্বাচন হবে।

কিন্তু কেন্দ্রীয় ও নির্বাহী কমিটির এখন পর্যন্ত কোনো সভা হয়নি। মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরী নিজেই কাউন্সিলের ডাক দিয়েছেন।

এক প্রশ্নে মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, সাতজন যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে পাঁচজন আমন্ত্রণ পাননি। ৩৫ জন নায়েবে আমিরের মধ্যে ২৩ জন এখনও দাওয়াত পাননি। এবং তারা যেন আসতে না পারেন পরিকল্পিতভাবে সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত