সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ নভেম্বর, ২০২০ ২৩:২৫

‘খুচরা ব্যবসায়ীকে বিচারবহির্ভূত হত্যার আওতায় নিলে মাদক নির্মূল হবে না’

রুমিন ফারহানা। ফাইল ছবি

সরকারি বিভিন্ন সংস্থার করা মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় সরকারদলীয় একজন সাবেক সাংসদ ও তাঁর পরিবারের ২৬ সদস্যের নাম এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে বিএনপি দলীয় সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘দু-একজন খুচরা মাদক ব্যবসায়ীকে বিচারবহির্ভূত হত্যার আওতায় এনে মাদক নির্মূল করা যাবে না।’

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) বিল-২০২০– এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান ওরফে বদিকে ইঙ্গিত করে রুমিন ফারহানা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন।

মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিচারক–স্বল্পতার কারণে আইনটি ঠিকমতো বাস্তবায়ন করা যায়নি। এ কারণে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এটি হলে মাদক মামলার জট আর হবে না। সময়মতো মামলা নিষ্পত্তি করা যাবে।’

বিরোধী দলের জনমত যাচাই, বাছাই ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি পাস হয়। তাতে মাদক মামলার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে।

এই বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, ‘মাত্র ২৫ গ্রাম মাদক রাখার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু তাতে কি মাদকের অপরাধ কমেছে? সরকার কি আইনের শাসন, বিচার বিভাগের ওপর ভরসা রেখেছে? মাদক নির্মূলের চেষ্টা করেছে? তা–ই যদি করত, তাহলে দুই বছরে কী করে ৮০০ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়।’

রুমিন ফারহানা প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে রুমিন বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধের পরও কক্সবাজারে মাদক কেনাবেচা বেড়েছে। সুতরাং বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গোড়ায় হাত না দিলে এই সমস্যার সমাধান হবে না।’

জাতীয় পার্টির সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সকল উপজেলায় প্রায় সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আছেন। কিন্তু কোনো আদালত নেই। উপজেলা পর্যায়ে আদালত নেওয়ার সময় হয়েছে। তাহলে দুর্ভোগ কমবে।’

সাংসদ শামীম হায়দার আরও বলেন, ‘সম্প্রতি দেখা গেছে, এক ব্যক্তিকে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছয় মাস পর ওই ব্যক্তি জীবিত ফেরত এসেছেন। অবশ্যই ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে।’

জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেন, ‘২ বছরেও মাদক মামলা বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যায়নি। যখন আইন তৈরি করা হয়, তখন বাস্তবতা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।’

বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সংসদে শুধু আইন করা হচ্ছে, সংশোধন হচ্ছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ বা কোনো কার্যকারিতা নেই। মাদক মামলা ঝুলে আছে লাখ লাখ।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত