চট্টগ্রাম প্রতিবেদক

২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ১৯:২৭

চট্টগ্রামে মৌলবাদ নির্মূলে বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ঐক্যের ডাক পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের

যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের একদিন পর চট্টগ্রামে বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ঐক্যের ডাক দিয়েছেন পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক।

মুক্তিযুদ্ধসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে নানান প্রগতিশীল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত পাঁচ নাগরিক শহিদজায়া বেগম মুশতারি শফি, অধ্যাপক অনুপম সেন, অধ্যাপক রণজিৎ দে, ড. মঈনুল ইসলাম ও কবি আবুল মোমেনের ডাকে সোমবার বিকেলে (২৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে এক সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

'সর্বস্তরের সাংস্কৃতিক ও সচেতন নাগরিক' ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেয়া আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা হরতাল উপেক্ষা করেই বিপুল সংখ্যক মানুষ  অংশ নেন। প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের মিছিল নিয়ে এতে অংশ নিতে দেখা যায়।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে বীর চট্টলা আজ কলঙ্কমুক্তির পথে। সদ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া  সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারা আরও বলেন- "চট্টগ্রাম সবসময়ই প্রগতির জনপদ, চট্টগ্রামে জন্মেছেন মাস্টারদা সূর্যসেন, বীরকন্যা প্রীতিলতা। কাজেই সূর্যসেন, প্রীতিলতার  চট্টলায় যুদ্ধাপরাধীর জায়গা নেই"

উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক বিষ বাষ্পের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সাংস্কৃতিক ঐক্যের ডাক দিয়ে কবি আবুল মোমেন বলেন "আর কোন বিভেদ নয়, এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হবার সময়, সকল প্রগতিশীল শক্তির ঐক্যের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে সমূলে উৎপাটন করার এখনই উপযুক্ত সময়।"
 
দেশে সম্প্রতি মুক্তচিন্তার লেখক, ব্লগার ও প্রকাশক হত্যাকে মৌলবাদী চক্রের নীল নকশা হিসেবে চিহ্নিত করে বক্তারা বলেন, "ধর্মের দোহাই দিয়ে আলোকিত তরুণদের হত্যার উৎসব শুরু হয়েছে, সরকারকে এই নারকীয় তাণ্ডব থামাতে হবে, দেশের শুভ বোধ সম্পন্ন সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে"।

ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, "একসময় যুদ্ধাপরাধীরা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল, আজ শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সাথে এদের বিচার করতে সক্ষম হচ্ছেন, আমাদের উচিত তাঁর হাতকে শক্তিশালী করা"। সাকা চৌধুরীর সাথে ৬ষ্ট শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার স্মৃতি উল্লেখ তিনি বলেন- ''১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাকা যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করার পর তাঁর নামটি মুখে আনতেও আমার ঘৃণা হয়"।

শহিদজায়া বেগম মুশতারি শফি তাঁর বক্তব্যে ক্রান্তিকালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে একই ছাতার নিচে জড়ো হবার আহবান করেন।  

বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে গণসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে চট্টগ্রাম উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও রক্তকরবী সংগঠন।

সমাবেশ শেষে চেরাগী পাহাড় মোড় থেকে একটি মশাল মিছিল বের করা হয়, মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে অংশ নেয় - শ্রমিক লীগ, খেলাঘর, বাসদ, ছাত্র ইউনিয়ন সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত