সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ জুন, ২০১৭ ০১:০৮

ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে রেমিট্যান্সপ্রবাহ

নিম্নমুখী রেমিট্যান্সপ্রবাহে ঈদের হাওয়া লেগেছে। ফলে চলতি মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জুনের প্রথম ১৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭২ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে তা গত বছরের জুনে আসা রেমিট্যান্সকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেন, রমজান ও ঈদের সময় দেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে দেশের রেমিট্যান্সপ্রবাহে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস তথা ২০১৬ সালের জুলাইয়ে দেশে ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে, যা বিগত ৩৪ মাসের মধ্যে ছিল সর্বনিম্ন। এর পর আগস্টে ১১৮ কোটি ৩৬ লাখ, সেপ্টেম্বরে ১০৫ কোটি ৬৬ লাখ ও অক্টোবরে ১০১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে। নভেম্বরে  রেমিট্যান্সপ্রবাহ ৯৫ কোটি ১৪ লাখ ডলারে নেমে আসে, যা ছিল গত ৭২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর পর ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে। আর জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসার গতি আরেকটু বেড়ে আবার ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর পরের মাস ফেব্রুয়ারিতে তা আবার কমে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারে নেমে আসে, যা ছিল প্রায় ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে মার্চে আবারো রেমিট্যান্সপ্রবাহ শতকোটি ডলারের ঘর অতিক্রম করে। ওই মাসে এর পরিমাণ ছিল ১০৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ১৫৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরে একই সময় ছিল ১ হাজার ৩৪৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার। সে হিসেবে অর্থবছরের এ সময় প্রবাসী আয় কমেছে ১৯১ কোটি বা ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।

রেমিট্যান্সে অস্বাভাবিক নেতিবাচক প্রভাবে নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। দফায় দফায় দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে নামে। এর মধ্যেই উঠে আসে দেশের শ্রমবাজারের প্রধান প্রধান দেশগুলোয় বিকাশ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নামে অবৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স গ্রহণের বিষয়টি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দৈনিক লেনদেনসীমা কমিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধান শ্রমবাজারগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে কারণ চিহ্নিত করার জন্য একাধিক টিমও পাঠানো হয়।

ব্যাংক-সংশ্লিষ্টদের মতে, টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলার কিছুটা দুর্বল হওয়ায় প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। এতে ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা বেশি পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এছাড়া রমজান শুরু হওয়ায়ও প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে চলতি মাসে দেশে বড় অংকের প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত