সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ নভেম্বর, ২০১৭ ১২:৫৫

রাখাইনে থাকার ব্যবস্থা হলেই রোহিঙ্গারা চলে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা, সমঝোতা হয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চেয়েছে, রাখাইনে থাকার ব্যবস্থা হলে রোহিঙ্গারা চলে যাবে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোহিঙ্গা ফেরাতে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদসম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব কথা বলেন। এ সময় পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শুরু হবে। তবে ঠিক কত দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে তার কোনো সময়সীমা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। সেখানে খুঁটি-নাটি, ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। সেটা নিয়ে কথা না বলাই ভালো। মূল কথা হলো, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। যৌক্তিক সময়ে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ভারত ও চীন সহযোগিতা করতেও সম্মত। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

মন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমারের সাথে যে চুক্তিটি হয়েছে এটা রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে পাঠানোর প্রথম পদক্ষেপ। এরপর আরো পদক্ষেপ আছে। সেগুলোর কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সাথে আলোচনা চলছে। তাদের ফেরত পাঠানোর কাজে কোনো জটিলতা দেখা দিলে আমরা তাদের সাথে আবার আলোচনায় বসব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, রাখাইন যেহেতু এখন মানুষ বসবাসের উপযোগী নয়। এখন সেটাকে উপযোগী করে তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাখাইন রাজ্যের জন্য তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চুক্তি হয়েছে। অবশ্যই আইন অনুযায়ী হয়েছে। তবে আইন দিয়ে কিছুই হয় না। আইন মানলে ঠিক আছে, আইন না মানলে কী করার আছে?

তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের ইচ্ছে অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ১৯৯২ সালের চুক্তি অনুসরণ করা হয়েছে। কারন ১৯৯২ সালের চুক্তি তারা অনুসরণ করতে চায়। সেভাবেই জিনিসটি করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ফিরিয়ে নেওয়া। এতে ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, এটা নাই সেটা নাই- এসব বলে লাভ নাই।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি চেকপোস্টে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা। এ ঘটনার জের ধরে দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

মিয়ানমারের দাবি, রোহিঙ্গারা বাঙালি এবং তারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদের আশ্রয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ইতিহাস বলে, তারা যুগের পর যুগ ধরে ওই অঞ্চলে বাস করছে।

সর্বশেষ রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে হতবাক হয় বিশ্ব। জাতিসংঘকে একে জাতিগত নিধন বলে উল্লেখ করে। অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কিছুটা নমনীয় হয় মিয়ানমার সরকার এবং ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার কথা বলে।

এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির আলোচনা চলছে। এ উদ্দেশ্যে প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটি সফর করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত