সিলেটটুডে ডেস্ক

২০ মার্চ, ২০১৮ ১২:৪৫

আফসানার অবস্থা অপরিবর্তিত, বেঁচে আছেন কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে

নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আশংকাজনক অবস্থায় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে বেঁচে আছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২০ মার্চ) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউর সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ড. বদরুল আলম বলেন, ওনার ব্রেন কাজ করছে না। তবে কিডনি, হার্টসহ অন্য অর্গ্যান এখনো সচল রয়েছে।

আফসানা খানমের বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, আফসানা খানমের অবস্থা এখনো আশংকাজনক। গতকাল থেকে তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তার মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বিঘ্ন ঘটায় আমরা সিটি স্ক্যান করার পর অস্ত্রোপচার করি। কিন্তু পরশু রাতে তিনি আবার স্ট্রোক করেন। এরপর রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আমরা আরেকটা অপারেশন করি।

তিনি আরো বলেন, আমরা তার মাথার খুলি খুলে রেখেছি। এটা তখনই করা হয় যখন কারো মস্তিষ্কের ওপর অতিরিক্ত চাপ যায়। মস্তিষ্কের অবস্থার উন্নতি হলে তা লাগানো হবে। তবে আমরা চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত কারো ন্যাচারাল ডেথ না হয় তাকে আমরা ডেথ ঘোষণা করতে পারি না।

বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ওনার সুস্থতার জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। তবে এখন বিদেশে নেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। তবে প্রয়োজন হলে বুধবার বোর্ড বসিয়ে আবার চিকিৎসা পদ্ধতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ সুলতানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও একদিন পর ১৩ মার্চ তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আফসানার এক আত্মীয় জানান, এভাবে স্বামীর মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না আফসানা খানম। স্বামীকে হারিয়ে কখনও বাকরুদ্ধ কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। স্বামী মারা যাননি, সবাই মিথ্যা কথা বলছে, আবিদ ফিরে আসবে, আবিদ তাকে সঙ্গে না নিয়ে মরতে পারে না- এমন প্রলাপ বকতে থাকেন।

এ অবস্থায় রোববার বাসায় ব্রেইন স্ট্রোক করেন তিনি। এরপর পরিবারের সদস্যরা তাকে আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।

এদিকে, নিহত পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বনানীর সামরিক কবরস্থানে সোমবার সাড়ে ৮টার দিকে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার মরদেহ বনানীর সামরিক কবরস্থানে আনা হয়। এ সময় ক্যাপ্টেন আবিদের সন্তান তামজিদ সুলতান মাহি (১৪) ও অন্য স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত