স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ এপ্রিল, ২০১৬ ০৭:৫২

ভলফসবুর্গের মাঠে ধরাশায়ী রিয়াল

অভিজ্ঞতা আর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে চ্যম্পিয়নস লীগে ভলফসবুর্গের চেয়ে এগিয়ে ছিল জিনেদিন জিদানের দল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে দেখা মিলল পুরো ভিন্ন চিত্র; রেকর্ড ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল জার্মানির ক্লাবটি।

বুধবার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ভলফসবুর্গের মাঠে ২-০ গোলে হেরে বড় অঘটনের শিকার হয়ে ফিরেছে রিয়াল। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ চারে উঠতে আগামী মঙ্গলবার ঘরের মাঠের ফিরতি পর্বে কমপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে জিততে হবে রোনালদো-বেলদের।

সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতায় এর আগে ৩২ বার কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে ২৬ বারই জেতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রিয়াল ছিল নিশ্চিত ফেভারিট। তাছাড়া প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠা ভলফসবুর্গের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ‘ক্লাসিকো’ জয়ের আত্মবিশ্বাসও ছিল বেল-বেনজেমাদের সঙ্গী।

অন্যদিকে, সবশেষ তিন ম্যাচে জয়শূন্য ছিল ভলফসবুর্গ। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ফর্মও দারুণ আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল মাদ্রিদের ক্লাবটিকে। কিন্তু ম্যাচে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি।

প্রতিপক্ষের মাঠে শুরুটা অবশ্য ভালোই ছিল রিয়ালের, দ্বিতীয় মিনিটেই জালে বল পাঠিয়েছিলেন রোনালদো। তবে প্রতিযোগিতার রেকর্ড গোলদাতার সে প্রচেষ্টা অফসাইডের ফাঁদে আটকা পড়ে। তিন মিনিট বাদে গ্যারেথ বেলকে বক্সের মধ্যে লুইস গুস্তাভো ফেলে দিলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন ওঠে, রেফারি অবশ্য তাতে সাড়া দেননি।

ষষ্ঠদশ মিনিটে বক্সের মধ্যে এক জনকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান করিম বেনজেমা, কিন্তু ওয়ান টু ওয়ান- এ সফল হতে পারেননি। ফিরতি বলে ওয়েলসের ফরোয়ার্ড বেল লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিলে রিয়ালের হতাশা বাড়ে।

এরপর ভিন্ন চিত্র; পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে রিয়ালের বক্সে ঢুকে পড়েন আন্দ্রে শুরলে। শট নেওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তাকে কাসেমিরো ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আর নিখুঁত লক্ষ্যভেদে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন রিকার্ডো রদ্রিগেজ। এরই সঙ্গে চূর্ণ হলো ইউরোপ সেরার মঞ্চে কেইলর নাভাসের অভেদ্য দেয়াল।

পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই রিয়াল শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানে ভলফসবুর্গ। ডান-দিক থেকে ব্রুনো হেনরিকের আড়াআড়ি পাস পেয়ে ছয় গজ বক্সের ঠিক সামনে থেকে সহজেই বল জালে জড়ান জার্মান মিডফিল্ডার মাক্সিমিলিয়ান আর্নল্ড।

গোলটিতে দায় এড়াতে পারবেন না মার্সেলো; হেসরিকের নিচু পাস তার পাশ দিয়ে চলে গেলেও ক্ষীপ্রতার পরিচয় দিতে পারেননি ব্রাজিলের এই ডিফেন্ডার। দুই গোল হজম করে রিয়ালের খেলোয়াড়রাও যেন খেই হারিয়ে ফেলে। সে সুযোগে প্রথমার্ধের বাকি সময়ে তাদের উপর চাপ ধরে রাখে স্বাগতিকরা, ব্যবধান অবশ্য আর বাড়েনি।

এর মধ্যে ৪০তম মিনিটে অতিথি শিবিরে যোগ হয় নতুন দুশ্চিন্তা; পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমা।

বিরতির আগ পর্যন্ত বল দখলে এগিয়ে থাকলেও স্বরুপে জ্বলে উঠতে পারেনি তারকাসমৃদ্ধ ‘বিবিসি’ আক্রমণভাগ; ভলফসবুর্গের ৫ টির বিপরীতে রিয়ালের মাত্র দুটি শটই লক্ষ্যে ছিল।

দ্বিতীয়ার্ধে দুদলের কারোর খেলাতেই তেমন কোনো ছন্দ ছিল না। মাঝমাঠ কেন্দ্রিক ফুটবলে এই অর্ধের প্রথম ২৫ মিনিটে কেউই কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। অবশেষে ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু ইসকোর বাড়ানো বল ধরে এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।

রোনালদোর প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হয়ে গেলেও এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জেগেছিল রিয়ালের। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি, বাকি সময়ে আর কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত