স্পোর্টস ডেস্ক

০৫ জুলাই, ২০১৬ ১৭:৪৭

ব্যক্তিগত জীবন থেকে ওয়েলসের খেলোয়াড়দের কাছে দেশ বড়

টুর্নামেন্টের আগে কেই–বা ভেবেছিল, ওয়েলস এত দূর আসবে? গ্রুপ পর্বে বা বড়জোর শেষ ষোলোতেই যাদের বিদায় দেখছিল সবাই, সেই ওয়েলসই কিনা সবাইকে চমকে দিয়ে পৌঁছে গেছে সেমিফাইনালে!

এতটা চমক মনে হয় ওয়েলস খেলোয়াড়েরা নিজেরাও ভাবেননি। এটা ঠিক, তাঁদের চেয়ে খুশি এই মুহূর্তে আর কেউ নেই। কিন্তু ওয়েলস সেমিতে ওঠায় সবচেয়ে বেশি ‘ঝামেলা’য়ও পড়ছেন সম্ভবত খেলোয়াড়েরাই। পড়তে হচ্ছে সূচি-বিপর্যয়ে!

এই তো কোয়ার্টার ফাইনালের আগে লেফট ব্যাক নিল টেলর অনুতাপ করছিলেন, বিয়ন্সের কনসার্টে যাওয়া হলো না তাঁর। যাবেন কী করে, মার্কিনি গায়িকার কনসার্ট যে ছিল বেলজিয়াম-ওয়েলস কোয়ার্টার ফাইনালে দিনে! তবে ক্রিস গুন্টার টেলরকে বলতে পারেন, ‘তোমার সমস্যা আর এমন কী হে! আমার তো ভাইয়ের বিয়েতেই তো যাওয়া হচ্ছে না।’

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) গুন্টারের ভাই মার্ক গুন্টারের বিয়ে মেক্সিকোতে। এই বিয়েতে আবার বরের ‘বেস্ট ম্যান’ হওয়ার কথা ছিল ক্রিস গুন্টারের। কিন্তু বিয়ের দিনটা হচ্ছে পর্তুগালের সঙ্গে ওয়েলসের সেমিফাইনালের ঠিক পরের দিন। এত অল্প সময়ে ফ্রান্স থেকে মেক্সিকোতে গিয়ে ভাইয়ের বিয়েতে যোগ দেওয়া সম্ভব হতো না গুন্টারের। তার ওপর যদি ওয়েলস ফাইনালে উঠেই যায়, তাহলে তো দলের ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
তাই ভাইয়ের বিয়ের দিন স্কাইপেতে সক্রিয় থাকবেন গুন্টার। রীতি মেনে ‘বেস্ট ম্যানে’র বক্তব্যও দেবেন। তবু ঝামেলা যদি কাটে! গুন্টারের বাবা-মা যে পড়ে গেছেন ভীষণ ঝামেলায়—দুই ছেলেরই জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিন, তাঁরা কোনটিতে যাবেন! শেষ পর্যন্ত ফুটবলই জিতেছে সেই বিতর্কে।

কিন্তু গুন্টারের মায়ের কষ্ট কি তাতেও কমে! তাঁর কাছে তো দুই ছেলেই সমান। গুন্টার নিজেই বললেন, ‘দুটির মধ্যে একটি বেছে নিতে হওয়ায় মা বেশ কষ্ট পেয়েছেন। বেশ বড় ঝামেলা দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এটি। কল্পনাও করতে পারবেন না!’ পরে আবার মজা করে ওয়েলস ডিফেন্ডার বলেছেন, ‘জানি না আমরা ফাইনালে উঠলে মার্ক কী করবে। আমার তো মনে হয়, ওর ডিভোর্সই হয়ে যাবে তাহলে!’

বিয়ের দিন টুর্নামেন্টের আগেই ঠিক হয়েছে। কিন্তু তখন কি আর গুন্টার পরিবারের জানত, ওয়েলস সেরা চারেও উঠে যাবে! ফুটবলের অনিন্দ্যসুন্দর অনিশ্চয়তার কারণে এখন উল্টো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। অবশ্য গুন্টার পরিবার সান্ত্বনা পেতে পারে কিংবদন্তি লিভারপুল কোচ বিল শ্যাঙ্কলির উক্তিটি থেকে, ‘ফুটবল তো আর জীবন-মরণের ব্যাপার নয়...এটা তার চেয়েও বেশি কিছু!’
যথার্থই বলেছেন শ্যাঙ্কলি!

সূত্র: ফক্স স্পোর্টস।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত