সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ এপ্রিল, ২০১৫ ০২:২৪

ভালো বোলিং-ব্যাটিং করলে এখনও ম্যাচ জেতা সম্ভব

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার খুলনা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের হাতে। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ২২৭ রান। হাতে নয় উইকেট রেখে তারা পিছিয়ে মাত্র ১০৫ রানে।

২য় দিনের ব্যাটিং, বোলিংও ফিল্ডিং ব্যর্থতায় খুলনা টেস্টের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৩৩২ রানের জবাবে মাত্র ১ উইকেট হারিয়েই ২২৭ রান করে ফেলেছে পাকিস্তান। ম্যাচের বাকি আরো ৩ দিন। তারপরেও জয়ের আশা ছাড়তে রাজি নন এই অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সৌম্য বলেন, আমরা জয়ের জন্যেই খেলবো। আমরা যদি বোলিং আর ফিল্ডিংটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারি আর ২য় ইনিংসে ভাল ব্যাটিং করতে পারি, আমার মনে হয় ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে, ম্যাচ জেতা সম্ভব।

সৌম্য আরো বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে সেশন ধরে জিততে হয়। আমরা যদি একটা ভাল সেশন কাটাতে পারি তবে পরিস্থিতি বদলে যাবে। আমরা যদি প্রথম সেশনে ভাল বোলিং করে বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নিতে পারি তবে ম্যাচের মোড় আমাদের দিকে ঘুরে যেতে পারে।

প্রথম দিন শেষে করে যাওয়া মুমিনুলের একটা বক্তব্য অর্ধেক ঠিক এবং অর্ধেক ভুল প্রমাণিত হলো। আশ্চর্যভাবে বাংলাদেশের স্কোরটা তিন শর ঘরেই আটকাল, কিন্তু বোঝা গেল এই উইকেটে ৩০০ রান যথেষ্ট নয়।

তাঁর আরেকটি বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হলো পুরোপুরি—ব্যাটসম্যানদের জন্য শট খেলা অসম্ভব কঠিন এই উইকেটেই পাকিস্তান দ্বিতীয় দিনটা শেষ করল ১ উইকেটে ২২৭ রানে। ১০৫ রানে পিছিয়ে আছে পাকিস্তান, হাতে নয় উইকেট।

টানা ৩ ওয়ানডে ও একমাত্র টি-টুয়েন্টি ম্যাচের জয়ের পর খুব স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টেও জেতার প্রত্যাশা করে বসে আছে টাইগার সমর্থকদের। কিন্তু বাংলাদেশ দল কি সত্যি জয়ের চিন্তা নিয়ে মাঠে নেমেছে নাকি 'ড্র এর জয় খেলি, সুযোগ পেলে জিতব'- এমন মানসিকতা কাজ করেছে দল নির্বাচনে?

না হলে টেস্ট ম্যাচ জিততে হলে যেখানে নেয়া লাগে ২০ উইকেট সেখানে কিনা বাংলাদেশ একাদশে নিয়মিত বোলার আছেন ৪ জন! এরমধ্যে সাকিব তো অলরাউন্ডার কাজেই একাদশে নির্ভেজাল বোলার আছে কেবল ৩ জন। টুকটাক বোলিং করতে পারা শুভাগত আর রিয়াদকে দিয়ে বাকি এক বোলারের অভাব পূরণের পরিকল্পনা তো টেস্ট ম্যাচের সাথে একদমই মাননসই নয়।

৮ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে শুভাগত খেলছেন এই জায়গায় জুবায়ের লিখনকে নিলে দলের বোলিং শক্তি অনেক বাড়ত বলেই মনে করেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা।

প্রশ্ন আছে প্রথম দিনের শ্লথ গতির ব্যাটিং নিয়েও। আধুনিক ক্রিকেটে সেকেলে ব্যাটিং এর প্রদর্শনী ছিল প্রথম ইনিংসে। প্রথম দিনে ৯০ ওভার ব্যাট করে ফ্লাট উইকেট বাংলাদেশ তুলেছিল ২৩৬ রান, রান রেট কখনই ৩ এর ঘরে পৌঁছে নি।

টেস্ট ক্রিকেটে এখন জয় পেতে হলে টিকে থাকার সাথে রানের চাকাও সচল রাখা লাগে সেই জায়গায় দুই ওপেনার প্রথম ২০ ওভারে তোলেছিলেন কিনা মাত্র ৩৬ রান! উইকেট কি আসলেই এত দুর্বোধ্য ছিল নাকি ড্র করার টার্গেট নিয়ে খেলছে মুশফিকের দল এমন প্রশ্ন উঠা অযৌক্তিক বলা যাচ্ছেনা।

প্রথম দিনের শ্লথ ব্যাটিং পোষাতে দ্বিতীয় দিনে একটু মেরে খেলতে গিয়ে টপাটোপ উইকেট খুইয়ে ৩৩২ রানেই গুটিয়ে যেতে হল, স্বাভাবিক ক্রিকেট খেললে এই স্কোর আরও অনেক বড় হত বলেই ধারনা সমর্থকদেরও।

দ্বিতীয় দিনের শেষ দুই সেশনে ব্যাট করার সুযোগ পাওয়া পাকিস্তানকে বিপাকে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলিং। ৪ নিয়মিত বোলারের সাথে ৪ ওকেশনাল বোলার ব্যবহার করেও ৫৮ ওভারে পাকিস্তানের উইকেট ফেলা গেছে মাত্র ১টি। হাফিজের সেঞ্চুরি আর আজহারের হাফ সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানিদের রান দাঁড়িয়েছে ১ উইকেটে ২২৭।

বড় কোন ভুল না করলে এই পিচ থেকে বিশাল একটি সংগ্রহ দাঁড় করানোর কথা ভাবতেই পারে তাঁরা। সেক্ষেত্রে এই ম্যাচ থেকে ইতিবাচক ফল তো বটেই ম্যাচ বাঁচানোই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে মুশফিকদের জন্য। যদিও বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যান এখনও বলছেন ম্যাচ জেতা সম্ভব! 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত